আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ সুষম খাদ্য, প্রমাণ খাদ্য, যথোপযুক্ত খাদ্য ও জ্বালানী খাদ্য । যা খাদ্য রসায়নের মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের অর্ন্তভুক্ত।
Table of Contents
সুষম খাদ্য, প্রমাণ খাদ্য, যথোপযুক্ত খাদ্য ও জ্বালানী খাদ্য
(ক) সুষম খাদ্য (Balanced diets):
যে সকল আহার্য বস্তু দেহের গঠন, বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনে সাহায্য করে, তাদেরকে সুষম খাদ্য বলে। সুষম খাদ্যে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট 1:72 অনুপাতে এবং খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকে।
অর্থাৎ যে প্রকার খাদ্যে দেহ সংরক্ষক ও দেহ পরিপোষক খাদ্য নির্দিষ্ট মাত্রায় থেকে শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন, কোষকলার গঠন, বৃদ্ধি, পরিস্ফুটনে অংশ নেয় এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে তাকে সুষম খাদ্য বলে।
সুষম -খাদ্য পরিকল্পনার মূলনীতিগুলি হল-
১। সুষম -খাদ্যে প্রোটিন : কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট হবে ১:৭:২ অনুপাতে।
২। দেহের ওজন, বয়স অনুসারে পুষ্টিমূল্যযুক্ত বানবাহন দরকার।
৩। ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি পর্যাপ্ত মাত্রায় থাকা দরকার।
৪। বাকির খান্যাভ্যাস, ধর্ম ও ভৌগোলিক অবস্থার কথা বিবেচনা করতে হবে ও খাদ্যের আঞ্চলিক সুলভতা ও আর্থিক অবস্থার কথাও মনে রাখতে হবে।
একমাত্র সুষম খাদ্যই স্বাস্থ্য রক্ষা করতে পারে না-
কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, ‘Health is a state of complete physical and social well being and not merely the absence of any disease and infirmity’.
সুষম- খাদ্য আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি, সক্ষমতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষা করতে পারে, কিন্তু স্বাস্থ্য প্রকৃতপক্ষে শুধু দৈহিক সুস্থতার সংকীর্ণ গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়। স্বাস্থ্য হল ব্যক্তির সুসংহত বিকাশ, তাই খাদ্য ছাড়া স্বাস্থ্য লাভের জন্য জীবনে দরকার সুস্থ মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি (প্রফুল্লচিত্ততা + নিয়মিত সময়ে আহার + খাদ্য বাছবিচার এড়িয়ে চলা) এবং স্বাস্থ্যবিধি (বিশুদ্ধ বাতাস বিশুদ্ধ পানি + সূর্যালোক পর্যাপ্ত ব্যায়াম)।
(খ) প্রমাণ খাদ্য (Standard diets)ঃ
কোন ব্যক্তির বয়স, ওজন, কাজের পরিমাণ ও শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট তাপনমূল্য যুক্ত খাদ্যকে প্রমাণ- খাদ্য বলে।
(গ) যথোপযুক্ত খাদ্য (Appropiate diets)ঃ
যে সকল খাদ্যে দেহের প্রয়োজনীয় তাপ ও শক্তি সরবরাহ করার জন্য কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট বা চর্বি ও প্রোটিন এবং শরীর সুস্থ, সবল ও কার্যক্ষম রাখার জন্য উপযুক্ত পরিমাণে ভিটামিন খনিজ লবণ ও পানি থাকে তাদেরকে যথোপযুক্ত খাদ্য বলে।
(ঘ) জ্বালানী খাদ্য (Fuel dicts)ঃ
কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্যকে জ্বালানি খাদ্য বলে। কারণ, এই সকল খাদ্য বিপাকের ফলে উৎপন্ন শক্তি হৃদস্পন্দন, মাংসপেশি সংকোচন-প্রসারণ, পরিপাকতন্ত্রের ও রেচনতন্ত্রের চলনে সাহায্য করে।
আরও দেখুনঃ