ভাজা খাবারের ১৩ টি আইটেম : ভাজা খাবারের এর যত পদ নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে রেনুক দেবী চৌধুরীর নাম। তিনি তার বই “রকমারি নিরামিষ রান্না” নামক বইতে খুবই চমৎকার করে লিখেছেন –
![ভাজা খাবারের ১৩ টি আইটেম 2 ভাজা খাবারের ১৩ টি আইটেম - গম [ Wheat ]](https://foodgoln.com/wp-content/uploads/2022/05/গম-Wheat-6-300x171.jpg)
Table of Contents
ভাজা খাবারের ১৩ টি আইটেম
দালিয়া বা গমের বড়া:
উপকরণ: গম বা দালিয়া ২৫০ গ্রাম, কলাই ৫০ গ্রাম, কালোজিরে ১ চামচ, কাঁচালঙ্কা কুচি ৩টি, হিং ছোট মটর দানার পরিমাণ, নুন পরিমাণ মতো, খাবার সোডা (সোডিবাইকার্ব) / চা-চামচ, তেল ১২৫ গ্রাম মতো।
ফেটাবার সময় মিশিয়ে দিতে হবে। গরম গরম খেতে ভাল লাগে। দ্রষ্টব্য: পেঁয়াজ দিলে আর হিং দেবার প্রয়োজন নেই।
ঢ্যাঁড়শ ভাজা
উপকরণ: কচি ঢ্যাঁড়শ, পরিমাণ মতো নুন, ভাজবার জন্যে তেল। প্রণালী: ঢ্যাঁড়শ পরিষ্কার করে ধুয়ে নাও। একটু মোটা চাকা না হলে চাকাগুলো আঠায় জোড়া লেগে যাবে। কড়ায় একটু বেশি তেল দাও। তেল গরম হলে নুন মাখিয়ে ট্যাড়শ চাকা ছাড়ো। খুন্তি দিয়ে নেড়ে চেড়ে লাল মচমচে করে ভাজবে। খেতে ভাল লাগে।
![ভাজা খাবারের ১৩ টি আইটেম 4 ঢ্যাঁড়শ [ Ladies Finger ]](https://foodgoln.com/wp-content/uploads/2022/05/ঢ্যাঁড়শ-Ladies-Finger-5-300x171.jpg)
তিলের বড়া
উপকরণ: সাদা তিল ২৫ গ্রাম, মাঝারি ১ চামচ মিহি চালের গুঁড়ো বা চালবাটা, পরিমাণ মতো নুন, লঙ্কাবাটা সামান্য তেল। প্রণালী: তিল বেছে নিয়ে বেশি জলে ভাসিয়ে ধুয়ে জল ছেঁকে মিহি করে বেটে নাও। চালবাটা বা চালের গুঁড়ো মিশিয়ে, পরিমাণ মতো নুন দিয়ে, তিল একটু ফেটিয়ে নাও। উনুনে কড়ায় তেল দাও।
তেল ভাল তাতলে, তিলবাটা হাতে নিয়ে, ছোট ছোট বড়ার মতো গড়ে নিয়ে তেলে ছাড়ো। একটু শক্ত হলে উল্টে দাও। সব বড়াগুলো আলগা আলগা খুস্তি দিয়ে উল্টোপাল্টা করে নেড়েচেড়ে ভাজো। মচমচে ও বাদামি রং হলে নামাও। এইবার আর এক খোলা দাও। খেতে সুস্বাদু। দ্রষ্টব্য: চালের গুঁড়োর বদলে ময়দাও দেওয়া চলে।
![ভাজা খাবারের ১৩ টি আইটেম 5 তিলের বড়া [Tiler Bora ]](https://foodgoln.com/wp-content/uploads/2022/05/তিলের-বড়া-Tiler-Bora-6-300x213.jpg)
দুধ-কচুর ডাঁটার পাটভাজা (পোরে ভাজা)
উপকরণ: কৃষ্ণ কচুর (দুধ কচু) ডাঁটা ১টি, বেশি বুড়ো বা বেশি কচি নয়; গোলার জন্যে আটা, চালবাটা অথবা ডালের বেসন, হলুদ, নুন, ভাজবার জন্যে তেল। প্রণালী: ডাঁটাটি ছাড়িয়ে নিয়ে লম্বাভাবে বা গোল-গোল চাকা চাকা করে কাটো। চাকা পাতলা হবে না। আধ-কড়া আন্দাজ মোটা হবে। বেসন বা আটায় একটু তেলের ময়ান দিয়ে, কিছু চালবাটা মিশিয়ে পরিমাণ মতো নুন, একটু হলুদবাটা ও জল দিয়ে ফেটিয়ে ঘন গোলাতে ভাল করে ডুবিয়ে (চারদিক যেন গোলা ভাল করে লাগে) তেলে নরম আঁচে লাল ও মচমচে করে ভেজে গরম গরম পরিবেশন করো। খেতে অতি সুস্বাদু।

দোপাটি ফুলের বড়া
উপকরণ: টাটকা ফোটা দোপাটি ফুল, গোলার জন্যে ময়দা বা আটা, পরিমাণ মতো নুন, সামান্য কালোজিরে, সামান্য হলুদগুঁড়ো বা বাটা (না দিলেও চলে), কিছু তেল।
উনুনে কড়াতে বেশি তেল দাও। তেল তাতলে ২-৪টি করে ফুল একসঙ্গে নিয়ে, ময়দার গোলায় ডুবিয়ে ভাল করে গোলা মাখিয়ে তেলে ছাড়ো। উল্টেপাল্টে দাও। বেশ ফোলা ফোলা বড়া হবে। বাদামি রং ও মচমচে হলে নামাও। বড়ার ভেতর হতে ফুলের রং সুন্দর দেখা যায়। এই বড়া গরম গরম খেতে চমৎকার লাগে।
নারকেলের ফোঁপলের পাটভাজা
উপকরণ: নারকেলের ফোঁপল ১টি বা ২টি, ময়দা ৫০-৬০ গ্রাম, কালোজিরে /চা-চামচ, পরিমাণ মতো নুন, সামান্য লঙ্কাবাটা, চিনি / চা-চামচ। প্রণালী: নারকেলের ফোঁপল, চাকা চাকা বা আধখানা করে নিয়ে এক ইঞ্চির চারভাগের এক ভাগের থেকে একটু পাতলা চাকা কাটো। ময়দায় বেশ খাস্তা ময়ান দেওয়ার মতো তেল দিয়ে ময়ান দাও। জল দিয়ে ঘন গোলা করে খুব ভাল করে ফেটিয়ে নাও।
গোলা এমন হবে যাতে চাকাগুলোর গায়ে ভালভাবে লাগে, কিন্তু খুব ঘন না হয়। উনুনে কড়াতে একটু বেশি তেল দাও। ভাল গরম হলে, ময়দার গোলায় ফোঁপলের চাকা ডুবিয়ে ভাল করে চারদিক মাখিয়ে ভাসা তেলে ছাড়ো। একপিঠ ফুলে উঠলে উল্টে দাও। মচমচে গাঢ় বাদামি করে অল্প আঁচে ভেজে তোলো। গরম গরম খেতে ভাল। ঠাণ্ডা হলে নরম হয়ে যায়।
নিমপাতার পাটভাজা
উপকরণ: মাঝারি আকারের নিমপাতা, বেসন, পোস্ত, নুন, তেল। প্রণালী: মাঝারি আকারের নিমপাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে জল ঝরিয়ে রাখো। বেসন জলে গুলে অল্প পোস্ত আর পরিমাণ মতো নুন দিয়ে, বেশ করে ফেটিয়ে নাও।
পটলের পাটভাজা
উপকরণ: নরমবিচি পটল কয়েকটি, বেসন, সামান্য হলুদবাটা, সামান্য লঙ্কাবাটা, পরিমাণ মতো নুন, সামান্য পোস্ত দানা, তেল।
পালং পাতার পাটভাজা
উপকরণ: পালং পাতা কয়েকটি, ডালের বেসন পাতার পরিমাণে যতটুকু লাগে, লঙ্কাবাটা, পরিমাণ মতো নুন, অল্প পোস্ত, তেল বেশি।
পাট পাতার পাটভাজা
উপকরণ: পাট গাছের কচি ডগা এক গোছা, ময়দা বা আটা চালের গুঁড়ো, পরিমাণ মতো নুন, সামান্য হলুদবাটা, কালোজিরে বা সামান্য পোস্ত, তেল।
পিঁয়াজি
উপকরণ: বড় পেঁয়াজ ৪-৫টি, বেসন ৬০ গ্রাম মতো, পরিমাণ মতো নুন, লঙ্কাবাটা ১ চা-চামচ বা কাঁচালঙ্কার মিহি কুচি, তেল, সামান্য হলুদবাটা (না দিলেও চলে)।

প্রণালী: সব পেঁয়াজ ছাড়িয়ে ধুয়ে সমান মাপে লম্বা করে কুচিয়ে নাও। পেঁয়াজে আন্দাজ মতো নুন মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দাও। পেঁয়াজের জল বার হয়ে পেঁয়াজ বেশ নরম হয়ে গেলে, পেঁয়াজের সঙ্গে বেসন, কাঁচালঙ্কাকুচি বা লঙ্কাবাটা ও হলুদবাটা দিয়ে মাখো। বেসন প্রথমেই সবটা দেবে না। যদি মাথার পর মনে হয় বেসন কম, তবে যেমন লাগে দেবে। নরম থসথসে মাথা হবে।
উনুনে কড়ায় তেল চড়াও। তেল ভাল তাতলে, পিঁয়াজির আকারে চ্যাপটা বড়া গড়ে তেলে দাও। একপিঠ লাল হলে উল্টে পাল্টে দাও। মাঝারি আঁচে দু-পিঠ লাল করে ভেজে গরম গরম খেতে দাও। বেশ মচমচে ও সুস্বাদু হবে। বেশি ভাজবে না। তা হলে পুড়ে পেঁয়াজ তেতো হয়ে যাবে।
পুরভরা চালকুমড়ো পাতার পাটভাজা
উপকরণ: চালকুমড়োর কয়েকটি পরিষ্কার ও নরম বড় পাতা, কিছুটা চাল বা চালের খুদ ভিজিয়ে মিহি করে বাটা, পরিমাণ মতো নুন, সামান্য হলুদবাটা, সামান্য লঙ্কাবাটা, ভাজবার জন্যে একটু বেশি তেল।
১নং পুরের উপকরণ: পাতার সংখ্যা বুঝে ১টি বা ২টি শশা তিতো কষ ফেলে, তার খোসা ছাড়িয়ে খুব মিহি করে কুচোও। কুরুনিতে কুরিয়ে জল চিপে নিতেও পারো। সামান্য কাঁচালঙ্কা ও পরিমাণ মতো নুন দিয়ে সরযে মিহি করে বাটো। একটু নারকেল কোরাও ইচ্ছা হলে দেওয়া যায়। সামান্য চিনি, পরিমাণ মতো নুন ও কাঁচালঙ্কাকুচি দিয়ে বেশ করে নারকেলবাটা, সরষেবাটা ও শশা কুচি বা কোরা মেখে রাখো। এটাই পুর।
প্ৰণালী: কুমড়ো পাতাগুলি পরিষ্কার করে ধুয়ে একটু নুন মাখিয়ে রাখো। পাতা নরম হলে সামান্য চটকে জল চিপে ফেলো, পাতা যেন ছিঁড়ে না যায়। এক-একটি পাতা বিছিয়ে পরে পুর, পাতলা পাতলা করে ছাড়িয়ে বেশ করে মাখিয়ে দাও। এবার পুরভরা পাতাগুলো ভাঁজ করে কোনা নিমকির মতো কিংবা চারকোনা করে মুড়ে রাখো। চালবাটায় হলুদ, লঙ্কা, নুন ও জল মিশিয়ে ঘন গোলা করে বেশ করে ফেটিয়ে রাখো। উনুনে কড়াতে বেশি তেল চড়াও। তেল ভাল তাতলে, চালবাটার গোলায় পুরভরা পাতা ডুবিয়ে ভাল করে গোলা মাখিয়ে তেলে ছাড়ো। একটু শক্ত হলে উল্টে দাও।
এপিঠ-ওপিঠ করে গাঢ় বাদামি করে ভেজে তোলো। গরম গরমই পরিবেশন করো। খুবই মুখরোচক। ২নং পুরের প্রণালী: আলু সিদ্ধ করে খুব মিহি করে চটকিয়ে পরিমাণ মতো নুন, ঝালের পছন্দ মতো কাঁচালঙ্কাকুচি, সামান্য চিনি মেখে নিয়ে ১ নং পুর দিয়ে যেভাবে তৈরি হয়েছে ওইভাবেই তৈরি হবে। খেতে ভাল।
৩নং পুরের প্রণালী: নুন লঙ্কা দিয়ে মিহি করে সরষেবাটা ১ ভাগ, মিহি নারকেলবাটা ৩ ভাগ, পরিমাণ মতো নুন, সামান্য চিনি, আর কাঁচা বা শুকনোলঙ্কাবাটা, পছন্দ মতো মিশিয়ে ভাল করে মেখে একই প্রণালীতে কুমড়ো পাতায় ভরে ভাজা হবে। খেতে মুখরোচক।
পেঁয়াজ কলির পকোড়া
উপকরণ: প্রয়োজন মতো পেঁয়াজকলি, ঝালের রুচি অনুযায়ী কাঁচালঙ্কা ২-৩টি, পরিমাণ মতো নুন, বেসন, তেল।

প্রণালী: পকোড়ার প্রয়োজন মতো পেঁয়াজকলি আগের দিন কুচিয়ে রাখো। রুচিমতো কাঁচালঙ্কাও মিহি করে কুচিয়ে নিয়ে কুচানো পেঁয়াজকলির সঙ্গে মিশিয়ে রাখো। আন্দাজ মতো নুন মাখিয়ে একটি ডেকচি বা কোনও গর্তবাসনে রেখে দাও। পরের দিন পেঁয়াজকলি থেকে যে জল বেরিয়েছে দেখবে, ওই জল ফেলে দিয়ো না।
অল্প বেসন দিয়ে এই জল দিয়ে পেঁয়াজকলি মাখা মাখা করে নাখো। উনুনে কড়ায় তেল চড়াও। তেল বেশ গরম হলে মাথা পেঁয়াজকলি মাঝারি আকারে বড়ার মতো করে। তেলে দাও। এক পিঠ শক্ত হলে উল্টে দাও। লাল মচমচে করে ভাজা পকোড়া চা-এর সঙ্গে বা ডাল-ভাতের সঙ্গে খেতে বেশ ভালই লাগে।
আরও পড়ুন: