আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় অ্যাসিটিক অ্যাসিড উৎপাদন প্রক্রিয়া বর্ণনা ,যা জৈব প্রক্রিয়া প্রযুক্তি অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
অ্যাসিটিক অ্যাসিড উৎপাদন প্রক্রিয়া বর্ণনা
পাইরোলিগনাস অ্যাসিড (Pyroligneous acid) হতে ঃ কাঠের অর্ন্তধূম পাতনে উৎপন্ন পাইরোলিগনাস অ্যাসিড অ্যাসিটিক অ্যাসিডের অন্যতম উৎস। এতে ৪-১০% অ্যাসিটিক অ্যাসিড, মিথাইল অ্যালকোহল (প্রায় ৩%) ও অ্যাসিটোন (প্রায় ০.৫%) প্রভৃতি নানা প্রকার জৈব পদার্থ বর্তমান থাকে।
পাইরোলিগনাস অ্যাসিডের সাথে চুন মিশ্রিত করে পাতন করলে মিথাইল অ্যালকোহল, অ্যাসিটোন প্রভৃতি জৈব পদার্থ বাষ্পাকারে উড়ে যায় এবং পাতন পাত্রে ক্যালসিয়াম অ্যাসিটেট থেকে যায়।
ক্যালসিয়াম অ্যাসিটেটের সাথে পরিমাণমতো লঘু H2SO4 মিশ্রিত করে পাতন করলে লঘু অ্যাসিটিক অ্যাসিড গ্রাহক পাত্রে সঞ্চিত হয়।
2CH3 – COOH + Ca (OH)2 = (CH3 – COO) 2 Ca + 2H2O –
ক্যালসিয়াম
অ্যাসিটেট
(CH3 – COO)2 Ca + H2SO4 = 2CH3- COOH + CaSO
উৎপন্ন অ্যাসিডকে NaOH যোগে প্রশমিত করে ঘনীভূত করলে সোডিয়াম অ্যাসিটেট (CH3 – COONa. 3H2O) এর স্ফটিক উৎপন্ন হয়।
অতঃপর সোডিয়াম অ্যাসিটেটকে পৃথক করে বিগলিত করলে পানি দূরীভূত হয় ফলে অনার্দ্র সোডিয়াম অ্যাসিটেট প্রস্তুত হয়। পরে তাকে গাঢ় H2SO4 সহযোগে পাতন করলে পাতিতরূপে যে অ্যাসিটিক পাওয়া যায়, তাকে গ্লেসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড (Glacial acetic acid) বলে।
এ অ্যাসিডকে ১৬.৭° সে. উষ্ণতায় হিমায়িত বরফের ন্যায় (Glacial ice like) কঠিন মনে হয় বলে একে এ নামে অভিহিত করা হয়। এ অ্যাসিডের বিশুদ্ধতা প্রায় ৯৯% ।
CH3 – COOH + NaOH = CH3 – COONa + H2O
2CH3 – COONa + H2SO4 = 2CH3 – COOH + Na2SO4
গ্লাসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড ঃ শুষ্ক, বিশুদ্ধ ও ১০০% অ্যাসিটিক অ্যাসিডকে গ্ল্যাসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড (Glacial acetic acid) বলে । একে ১৬.৭° সে. তাপমাত্রায় শীতল করলে তা বরফের ন্যায় কঠিন আকার ধারণ করে বলে ল্যাটিন শব্দ Glacial (যার অর্থ বরফের মতো) হতে এটির নামকরণ হয়েছে : গ্ল্যাসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড।
২। সংশ্লেষণ প্রণালি (অ্যাসিটিলিন, CH = CH হতে) ঃ মারকিউরিক সালফেট ও সালফিউরিক অ্যাসিডের সান্নিধ্যে অ্যাসিটিলিন পানি যোগে অ্যাসিটালডিহাইড উৎপন্ন করে।
উৎপন্ন অ্যাসিটালডিহাইডকে ম্যাঙ্গানাস অ্যাসিটেট প্রভাবকের সান্নিধ্যে বায়ুর সাহায্যে জারিত করলে অ্যাসিটিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। মনে হয় পারঅ্যাসিটিক অ্যাসিড উৎপাদন রোধকল্পে উপরোক্ত প্রভাবকের উপস্থিতিতে জারণ ক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
HC = CH + H2O H2SO4 + HgSO4 → CH3 – CHO
CH3 – CHO + O2 = CH – COOH
বর্তমান শিল্পক্ষেত্রে এ প্রণালিতে অধিকাংশ গ্লেসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড উৎপাদন করা হয়।
৩।ইথাইল অ্যালকোহল হতে ঃ ইথাইল অ্যালকোহলকে পটাসিয়াম ডাইক্রোমেট ও সালফিউরিক অ্যাসিড অথবা প্লাটিনাম-ব্ল্যাক প্রভাবের সান্নিধ্যে বায়ুর সাহায্যে জারিত করলে অ্যাসিটিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়।
CH 3 – CH2 – OH [0] →CH 3- CHO [O]→CH3-COOH
আরও পড়ূনঃ