অণুজীবের বৃদ্ধির নীতি বর্ণনা

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় অণুজীবের বৃদ্ধির নীতি বর্ণনা ,যা উৎসেচক অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

অণুজীবের বৃদ্ধির নীতি বর্ণনা

অণুজীব বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক পরিবেশে জন্মায় ও বৃদ্ধি লাভ করে। অণুজীবের কোষের উপাদানের সাধারণ বর্ধিত অণুজীবের বৃদ্ধি (Microbial growth)। উচ্চ শ্রেণির জীবের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি বলতে যে-কোনো অংশের বৃদ্ধিকে বা বর্ধনকে বুঝায়।

জীবাণুর কোষের গঠন অতিসরল ও সাধারণ। তাই জীবাণুর বৃদ্ধি বলতে সার্বিক কোষ বা অংশের বৃদ্ধিকে বুঝায়। অর্থাৎ জীবাণুর বৃদ্ধি বলতে এদের বংশবৃদ্ধি বা সংখ্যায় বৃদ্ধিকে বুঝায়।

 

অণুজীবের বৃদ্ধির নীতি বর্ণনা

 

একটি জীবাণুকে তার পরিমিত পুষ্টি মাধ্যম ও পরিবেশে কর্ষণ করে তার পর্যায়ক্রমিক বৃদ্ধির রৈখিক উপস্থাপনকে বৃদ্ধি কারভ বলে। বৃদ্ধি কার্ভের প্রধানত চারটি পর্যায় রয়েছে। পর্যায়গুলো হচ্ছে- মন্থর পর্যায়, দ্রুত বৃদ্ধি পর্যায়, স্থির পর্যায় এবং মৃত্যু পর্যায়।

জীবাণুর কর্ষণ বৃদ্ধি কার্ভের বিভিন্ন পর্যায় : জীবাণু অনুকূল পরিবেশে কোনো কর্ষণ মাধ্যমে চাষ করা হলে প্রধানত চারটি পর্যায়ের সম্মুখীন হয়। পর্যায়গুলো চিত্রসহ একে একে বর্ণনা করা হলো।

১। মন্থর পর্যায় বলা লেগ ফেজ (Lag phase) (ক-খ) ও এ পর্যায়ে বৃদ্ধিতে সক্ষম জীবাণু কর্ষণ মাধ্যমের উপাদান ও পরিবেশগত অবস্থার অনুধাবনের জন্য কিছুক্ষণ সময় বৃদ্ধি বা বংশবিস্তার বন্ধ রাখে।

এ পর্যায়ে জীবাণু সংখ্যা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে আবার বৃদ্ধি নাও পেতে পারে। পরিবেশ অনুকূলে মনে হলে জীবাণুটি ধীরে ধীরে বংশ বিস্তার আরম্ভ করে। তাত্ত্বিক বলে। বৃদ্ধি কার্ডের প্রধানত চারটি পর্যায় রয়েছে। পর্যায়গুলো হচ্ছে- মন্থর পর্যায়, দ্রুত বৃদ্ধি পর্যায়, স্থির পর্যায় এবং মৃত্যু পর্যায়।

২। বৃদ্ধি শুরু পর্যায় (Positive phase of acceleration) (খ-গ) ঃ এ পর্যায়ে বৃদ্ধির হার অনবরত বাড়তে থাকে।

৩। দ্রুত বৃদ্ধি পর্যায় বা লগ ফেজ (Log-phase) (গ-ঘ) : এটি জীবাণু বৃদ্ধির মূল পর্যায়। এ পর্যায়ে জীবাণু তার সংখ্যা বৃদ্ধি দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করে। পুষ্টি মাধ্যমের স্বল্পতা না আসা পর্যন্ত জীবাণুগুলো জ্যামিতিক হারে সংখ্যায় অত্যন্ত দ্রুত হারে এবং স্থিরভাবে চলতে থাকে। এ বৃদ্ধি অবিরত চলতে থাকে যতক্ষণ না মন্থর পর্যায়ের সূত্রপাত ঘটে।

 

অণুজীবের বৃদ্ধির নীতি বর্ণনা

 

৪। দ্রুত বৃদ্ধি পর্যায় হ্রাস (Phase of negative acceleration) (ঘ-ঙ) ঃ এসময় বা এপর্যায়ে জীবাণুর দ্রুত বৃদ্ধির হার হ্রাস পেতে শুরু করে।

৫। সর্বোচ্চ স্থির পর্যায় (Maximum stationary phase) (G-চ) ঃ এপর্যায়ে জীবাণু সংখ্যায় বৃদ্ধি পায় না বরং স্থির থাকে।

৬। মৃত্যু শুরু পর্যায় (Positive Death Phase) (চ-ছ) ঃ এ পর্যায়ে জীবাণু নিঃসৃত বিষাক্ত দ্রব্যের প্রভাবে ও খাদ্যাভাবের দরুন জীবাণু কোষগুলো মরতে শুরু করে।

৭। মৃত্যু পর্যায় বা হ্রাস পর্যায় (Death phase or phase of decline) (-) । এ পর্যায়ে জীবাণু সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। এই হ্রাসের হার দ্রুত বৃদ্ধি পর্যায়ের ঠিক বিপরীত।

জীবাণু সংখ্যা হ্রাস পেতে পেতে অবশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পর্যায় শুরুর স্থলে স্পোর উৎপাদনকারী জীবাণুগুলো মরে শূন্যের কোটায় না যেয়ে স্পোর গঠন করে প্রতিকূল অবস্থার হাত হতে নিজেদের রক্ষা করে থাকে।

 

অণুজীবের বৃদ্ধির নীতি বর্ণনা

 

এখানে উল্লেখ থাকে যে, প্রতিটি জীবাণুই তার অস্থিত্ব পৃথিবীতে রাখার জন্য প্রতিকূল পরিবেশে স্পোর উৎপাদন করে এবং প্রতিকূল পরিবেশে স্পোর হতে একটি অঙ্গজ কোষ (vegetative) অংকুরোদ্‌গম করে এবং পুনরায় দ্বি-ভাজন প্রক্রিয়ায় প্রজননে অংশ নেয় ।

দ্রুত বৃদ্ধি পর্যায় হতে একই পুষ্টি কর্ষণ মাধ্যমে ও অনুকূল পরিবেশে জীবাণুগুলোকে রি-ইনুকোলেশন বা পুনঃ জীবায়ন করলে। উক্ত বৃদ্ধি কার্ডে কোনো লেগ ফেজ (Lag phase) বা মন্থর পর্যায় থাকবে না ।

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment