আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ফ্যাক্টরি বিল্ডিং এর পরিকল্পনা । বেশিরভাগ খাবারকে ভোজ্য করার জন্য প্রাথমিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন হয় যখন সেকেন্ডারি ফুড প্রসেসিং উপাদানগুলিকে পণ্যের মতো পরিচিত খাবারে পরিণত করে, যেমন রুটি। টারশিয়ারি ফুড প্রসেসিংয়ের ফলে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন পণ্যে পরিণত হয় এবং মেটাবলিক রোগ যেমন, স্থূলতা এবং অটোইমিউন রোগ সহ বেশিরভাগ অ-তীব্র প্রদাহজনিত রোগে অবদান রাখার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
এই অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতো পণ্যগুলিতে যুক্ত করা মানবসৃষ্ট রাসায়নিক এবং প্রিজারভেটিভ থাকে যা প্রাকৃতিকভাবে ঘটে না এবং/অথবা হাইব্রিডাইজড এবং/অথবা জেনেটিকালি ম্যানিপুলেটেড উদ্ভিদ যেমন চিনি, কর্ন সিরাপ এবং বীজের তেল থেকে সহজে বের করা হয় এবং অপ্রয়োজনীয় উপাদানগুলির সাথে মিলিত হয়। ফাইবার যোগ করা একটি অস্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করে যেমন পণ্যের ফলে মানুষ এবং খামারের প্রাণীদের বিপাকীয় স্বাস্থ্য সমস্যা হয়।
Table of Contents
ফ্যাক্টরি বিল্ডিং এর পরিকল্পনা
৩.১ শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচন (Site selection):
শিল্পকারখানা স্থাপনের পূর্বে স্থান নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থান বাছাই করাবে স্থান নির্বাচন বা সাইট সিলেকশন বলে। সাধারণত নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো বিবেচনা করে স্থান নির্বাচন করা উচিত।
⇒ সন্তোষজনকভাবে পানি সরবরাহের প্রাপ্যতা
⇒ বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের সুযোগ-সুবিধা
⇒ কাঁচামালের সহজলভ্যতা
⇒ শ্রমিকের সহজপ্রাপ্যতা
⇒ কীটপতঙ্গ, অণুজীব ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে যে-সব কারণ তাদের অনুপস্থিতি
⇒ কারখানা বর্ধিতকরণ ও সুন্দর করতে যথেষ্ট বাড়তি জায়গার উপস্থিতি।
৩.২ ফ্যাক্টরি বিল্ডিং এর পরিকল্পনা (Planning the factory building):
ফ্যাক্টরি বিল্ডিং ডিজাইন পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়াদি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হয় :
১। উৎপাদন প্রক্রিয়া (Nature of manufacturing process)
২। প্লান্ট লে-আউট (Plant layout)
৩। প্রয়োজনীয় জায়গা (Space requirements)
৪। কাঁচামাল নাড়াচাড়া (Material handling)
৫। প্ল্যান্টের নিরাপত্তা (Plant protection)
৬। আলোর সরবরাহ (Lighting)
৭। হিটিং, ভেন্টিলেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং (Heating, ventilation and Air conditioning)
৮। সার্ভিস ফ্যাসিলিটিজ (Service facilities)
৯। সহজে চলাফেরা করার সুযোগ (Accessibility)
১০। ভবনের সৌন্দর্য (Asthetic consideration)
১১। বাহ্যিক আকার-আকৃতি (Appearance)
১২। সম্প্রসারণের সুযোগ (Future expansion)
১৩। অগ্নিপ্রতিরোধী ব্যবস্থা (Fire protection)
১৪। পরিবেশগত সুরক্ষা (Environmental protection)
১৫। বর্জ্য অপসারণ (Effluent disposal)
১৬। বায়ু সরবরাহ (Air supply)
১৭। স্বাস্থ্যবিধি (Sanitation)
১৮। নমনীয়তা (Flexibility)
১৯। সাশ্রয় (Economy)
৩.৩ ফ্যাক্টরি বিল্ডিং এর শ্রেণিবিভাগ (Types of factory buildings) :
ফ্যাক্টরি বিল্ডিং সাধারণত চার (৪) ধরনের, যথা-
১। Single-storeyed buildings (একক ভবন)
২। High bay and monitor type buildings
৩। Multi-storeyed buildings
৪। Buildings of special types.
Single-storeyed bullding এর সুবিধাসমূহ:
⇒ সহজেই সম্প্রসারণ করা যায়
⇒ প্রাকৃতিক আলো-বাতাস সহজেই প্রবেশ করতে পারে
⇒ কম সময়ে নির্মাণ করা যায়
⇒ সুপারভিশন ও কন্ট্রোল সহজ
⇒ হেভি/ভারী মেশিনারিজ স্থাপন করা যায়
⇒ নির্মাণখরচ তুলনামূলক কম
⇒ রক্ষণাবেক্ষণ সহজ।
Single-storeyed building এর অসুবিধাসমূহ:
⇒ জমির যথার্থ ব্যবহার হয় না
⇒ অধিক জায়গার দরকার হয়
⇒ প্রোডাকশন এরিয়াতেও অফিস ও স্টোরেজ রুম স্থাপন করতে হয়।
Single-storeyed building এর ব্যবহার:
Singled-storeyed বিল্ডিং নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়:
⇒ জমির দাম সস্তা।
⇒ হেভি মেশিনারিজ স্থাপন করতে হয়।
⇒ ফ্যাক্টরির আনুভূমিক সম্প্রসারণ প্রত্যাশা করা হয়।
৩.৪ ফ্যাক্টরি বিল্ডিং পরিকল্পনার সুবিধা (Benefits of planning factory buildings) :
পরিকল্পনা ছাড়া কখনোই খাদ্যশিল্প কারখানা স্থাপন করা সম্ভব নয়। প্রতিটি আধুনিক কাজের সফলতা নির্ভর করে তার পরিকল্পনার ওপর। পরিকল্পনা যত বাস্তবসম্মত হবে সফলতা ততই বেশি হবে। নিম্নে ফ্যাক্টরি বিল্ডিং এর পরিকল্পনার সুবিধাগুলো উল্লেখ করা হলো :
১। অল্প জায়গায় অধিক পরিমাণ যন্ত্রপাতি স্থাপন করা যায়।
২। পণ্যের নাড়াচাড়া কম করতে হয়।
৩। শ্রমিক-কর্মচারীদের নড়াচড়া কম করতে হয়।
৪। শিল্পকারখানায় দুর্ঘটনার পরিমাণ হ্রাস পায়।
৫। উৎপাদন খরচ কম হয়।
৬। পরিবেশের ক্ষতি হ্রাস পায়।
৭। মানসম্মত পণ্য উৎপাদন সহজ হয়।
৮। ব্যবসায় অধিক পরিমাণ লাভ হয় ইত্যাদি।
৩.৫ মেঝে, দেয়াল ও ছাদ নির্মাণে ব্যবহৃত বিল্ডিং নির্মাণসমাগ্রী (Building construction materials for floors, walls & roofs) :
ফ্লোর (floor) :
ঘরের যে অংশে মানুষ বসবাস করে অর্থাৎ ঘরের মধ্যে থাকার জন্য, জিনিসপত্র রাখার জন্য, যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারযোগ্য পায়ের নিচের জায়গাকেই মেঝে (Floor) বলে। বর্তমানে দালানে অনেকগুলো মেঝে থাকে। ভূমিতলে অবস্থিত ভূমির উপর অর্থাৎ প্লিনূন্ধ লেভেলে (Plinth level) যে মেঝে নির্মাণ করা হয়, তাকে একতলার মেঝে বা গ্রাউন্ড ফ্লোর বলে। এর প্রতি উপরের তলার মেঝে নিচের তলার ছাদ হিসাবে কাজ করে। যেমন- একতলার ছাদ দু’তলার মেঝে, দু’তলার ছাদ তিন তলার মেঝে ইত্যাদি। দালানের সর্বোচ্চ তলার মেঝের উপরে যে ছাদ থাকে, তাকে দালানের ছাদ বলে। মেঝেই দালানকে বিভিন্ন গৃহতলে বিভক্ত করে। সুতরাং যে সমতল পৃষ্ঠ আবাসিকদের আসবাবপত্র বা কারখানার যন্ত্রপাতি, পার্টিশন এবং আবাসিকবৃন্দকে বা কারখানার শ্রমিকবৃন্দকে ধারণ করে, তাকে ফ্লোর বলে। ফ্লোর প্রধানত দু’প্রকার, যথা-
১। গ্রাউন্ড ফ্লোর (Ground floor),
২। আপার ফ্লোর (Upper floor)।
যে মেঝে বা ফ্লোর সরাসরি মাটির উপর ভর করে থাকে, তাকে গ্রাউন্ড ফ্লোর বলে এবং মাটি তল (Ground level) থেকে উপরে অবস্থিত ফ্লোরকে আপার ফ্লোর বলে। আবার মাটি তল (Ground level) থেকে নিচের দিকে অবস্থিত ফ্লোরকে বেইসমেন্ট ফ্যাক্টরি বিল্ডিং এর পরিকল্পনা (Basement) ফ্লোর বলে। এটাও গ্রাউন্ড ফ্লোরের অন্তর্ভুক্ত।
আপার ফ্লোর (Upper floor) :
বহুতলা-বিশিষ্ট দালানে মাটির সমতলে যে-ফ্লোর নির্মাণ করা হয়, তাকে গ্রাউন্ড ফ্লোর বলে। আর দালানের সর্ব উপরে সমতল বা ঢালু কাঠামো, যা রুমকে আবৃত করে রাখে তাকে রুফ বা ছাদ বলে। এ গ্রাউন্ড ফ্লোর এবং রুফ বাদে দালানের সমস্ত মধ্যবর্তী ফ্লোরকে আপার ফ্লোর বলে। আপার ফ্লোর এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সামর্থ্য এবং স্থায়িত্ব (Strength and stability)। কারণ এ ফ্লোর দেয়াল, বিম ইত্যাদি প্রান্ত সাপোর্টের উপর অবস্থান করে। তাই প্রান্ত সাপোর্টকে যথেষ্ট শক্তিশালী হতে হয়। এ ফ্লোর ডিজাইন করতে হলে উপর থেকে চাপানো লোড, ফ্লোর এর নিজস্ব ওজন, পার্টিশন দেয়ালের ওজন ইত্যাদি বিবেচনা করতে হয়।
গ্রাউন্ড ফ্লোর এবং আপার ফ্লোর এর মধ্যে পার্থক্য:
গ্রাউন্ড ফ্লোর এবং আপার ফ্লোর এর মধ্যে পার্থক্যগুলো নিম্নরূপ:
গ্রাউন্ড ফ্লোর | আপার ফ্লোর |
১। মাটির পৃষ্ঠতলের উপর সরাসরি অবস্থান করে যে ফ্লোর নির্মাণ করা হয়, তাকে গ্রাউন্ড ফ্লোর বলে। | ১। মাটির সমতল থেকে উপরে যে ফ্লোর নির্মাণ করা হয়, তাকে আপার ফ্লোর বলে। |
২। শক্তিশালী এবং দৃঢ়তা এ মেঝের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে না। কারণ এ মেঝে সরাসরি মাটির উপর অবস্থান করে। | ২। এ মেঝেকে পর্যাপ্ত শক্তিশালী ও দৃঢ় হতে হয়। কারণ কেবলমাত্র মেঝের প্রান্তগুলো সাপোর্টের উপর অবস্থান করে। |
৩। আর্দ্রতা প্রতিরোধ এবং তাপ প্রতিরোধ (Thermal insulation) গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। | ৩। শব্দ প্রতিরোধ (Sound insulation) গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। |
৪। অগ্নিপ্রতিরোধ (Fire resistance) কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। | ৪। এ মেঝের ক্ষেত্রে অগ্নিপ্রতিরোধ গুরুত্বপূর্ণ। |
মেঝের উপাংশ (Components of floors) :
প্রতিটি মেঝের দুটি কম্পোনেন্ট (Component) রয়েছে, যথা-
১। ফ্লোর বেইস বা সাব-ফ্লোর (Floor base or sub-floor)
২। ফ্লোরিং বা ফ্লোর কভারিং (Flooring or floor covering)।
ফ্লোর বেইস কাঠামোর একটি কম্পোনেন্ট, যা ফ্লোর কভারিংকে সাপোর্ট প্রদান করে। গ্রাউন্ড ফ্লোর সরাসরি মাটির উপর অবস্থান করে। এ জাতীয় ফ্লোরকে সলিড ফ্লোর (Solid floor) বলে। চিত্রঃ ৩.১-এ মাটির উপর অবস্থিত সলিড গ্রাউন্ড ফ্লোর এর বেইস এর স্তর দেখানো হলো। আর মাটির লেভেল থেকে কিছুটা উপরে হলে তাকে সাসপেন্ডেড ফ্লোর বলে। এটা সাধারণত কাঠের হয়।

সলিড গ্রাউন্ড ফ্লোর এর উপাংশসমূহ:
১। ফ্লোর বেইস বা সাব-ফ্লোর বা বেইস কোর্স (Floor base or sub-floor or base course)
(ক) প্রথম স্তর বা সর্বনিম্ন স্তর (lowest layer)- মাটি সমতলের উপরে ভরাটকৃত দৃঢ়াবন্ধ মাটি।
(খ) দ্বিতীয় স্তর (Second layer)- হালকা সিমেন্ট কংক্রিট (Lean cement concrete) বা লাইম কংক্রিট বা ভালোভাবে
দুরমুশকৃত ভাঙা ইটের বা পাথরের টুকরা। (গ) তৃতীয় স্তর (Third layer)- সিমেন্ট কংক্রিট বা সুবিন্যস্ত ইট বা পাথর। তবে ফ্লোর বেইসকে শক্তিশালী করতে সচরাচর সিমেন্ট কংক্রিটই বেশি ব্যবহৃত হয়।
২। ফ্লোরিং বা ফ্লোর কভারিং বা ফ্লোর ফিনিশ (Flooring or floor covering or floor finish)।
গ্রাউন্ড ফ্লোরের গুণাগুণ (Requirements of ground floor) :
গ্রাউন্ড ফ্লোরের নিম্নলিখিত গুণাগুণ থাকা প্রয়োজন, যথা-
১। এটা পর্যাপ্ত শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে।
২। মসৃণ ও সমতল পৃষ্ঠ প্রদান করে।
৩। পর্যাপ্ত অগ্নিরোধী হবে।
৪। শব্দনিরোধক হবে।
৫। আর্দ্রতা প্রতিরোধী হবে।
৬। থার্মাল ইন্সুলেশন সম্পন্ন হবে।
৭। গোপনীয়তা রক্ষা করে।
৮। মেরামতজনিত খরচ কম হবে।
৯। নির্মাণখরচ কম হবে।
আপার ফ্লোর এর গুণাগুণ (Requirements of upper floor):
আপার ফ্লোরের নিম্নোক্ত গুণাবলি থাকা প্রয়োজন, যথা-
১। এটা পর্যাপ্ত শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে।
২। পর্যাপ্ত শব্দনিরোধক হবে।
৩। অগ্নিনিরোধক হবে।
৪। এটা দৃঢ়াবদ্ধ ও কম্পনবিহীন হবে।
৫। থার্মাল ইনসুলেশন গুণসম্পন্ন হবে।
৬। নির্মাণব্যয় এবং মেরামত ও নির্বাহী ব্যয় স্বল্প হতে হবে।
গ্রাউন্ড ফ্লোর নির্মাণে ব্যবহৃত মালামাল (Materials used for the construction of ground floor) :
গ্রাউন্ড ফ্লোর নির্মাণে নিম্নলিখিত মালামাল ব্যবহৃত হয়:
১। সিমেন্ট কংক্রিট (Cement concrete)
২। লাইম কংক্রিট (Lime concrete)
৩। পাথর (Stone)
৫। কাঠের ব্লক (Wooden block)।
৪। ইট (Brick)
ফ্লোর ফিনিশ বা ফ্লোর কভারিং বা ফ্লোরিং এর জন্য ব্যবহৃত মালামালগুলো নিম্নরূপ:
১। মাড এবং মুরাম (Mud and muram)
২। ইট (Bricks)
৩। ফ্লাগ স্টোন (Flag stone)
৪। কংক্রিট (Concrete)
৫। টেরাজো (Terrazzo)
৬। মোজাইক (Mosaic)
৭। টাইল (Tiles)
৮। মার্বেল (Marble)
৯। কাঠ (Wood or timber)
১০। গ্রানোলিথিক (Granolithic finish)- শক্তিশালী কংক্রিট (Rich concrete)
১১। অ্যাসফাল্ট (Asphalt)
১২। রাবার (Rubber)
১৩। লিনোলিয়াম (Linoleum)- তিসির তেল, গাম, রেজিন, পিগমেন্ট (রং), কাঠের গুঁড়া, কর্কের গুঁড়া সংযোগে প্রস্তুতকৃত শিট
১৪। কর্ক (Cork)- ওক গাছের বাহিরের বাকল দ্বারা তৈরি
১৫। গ্লাস (Glass).
১৬। মাগনেসাইট (Magnesite)-ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড, অ্যাজবেস্টস, কাঠের গুঁড়া ইত্যাদি সহযোগে প্রস্তুত
১৭। প্লাস্টিক বা পি.ভি.সি. (Plastic or P.V.C.) I
ফ্লোরিং এর প্রকারভেদ (Types of flooring):
নির্মাণসামগ্রী অনুযায়ী গ্রাউন্ড ফ্লোরের কভারিং বা ফ্লোর ফিনিশ বা ফ্লোরিং-এর প্রকারভেদ নিম্নরূপ:
১। মাড ফ্লোরিং (Mud flooring)
২। মুরাম ফ্লোরিং (Muram flooring)
৩। ব্রিক ফ্লোরিং (Brick flooring)
৪। ফ্লাগ স্টোন ফ্লোরিং (Flag stone flooring)
৫। সিমেন্ট কংক্রিট ফ্লোরিং (Cement concrete flooring)
৬। টেরাজো ফ্লোরিং (Terrazzo flooring)
৭। মোজাইক ফ্লোরিং (Mosaic flooring)
৮। টাইল ফ্লোরিং (Tiled flooring)
৯। মার্বেল ফ্লোরিং (Marble flooring)
১০। গ্রানোলিথিক ফ্লোরিং (Granolithic flooring)
১১। টিম্বার ফ্লোরিং (Timber flooring)
১২। অ্যাসফাল্ট ফ্লোরিং (Asphalt flooring)
১৩। রাবার ফ্লোরিং (Rubber flooring)
১৪। লিনোলিয়াম ক্লোরিং (Linolium flooring)
১৫। কর্ক ফ্লোরিং (Cork flooring)
১৬। গ্লাস ফ্লোরিং (Glass flooring)
১৭। প্লাস্টিক বা পি.ভি.সি. ফ্লোরিং (Plastic or P.V.C. flooring)
১৮। অ্যাসিড প্রুফ ফ্লোরিং (Acid proof flooring)
১৯। ম্যাগনেসাইট ফ্লোরিং (Magnesite flooring)।
গ্রাউন্ড ফ্লোর এর নির্মাণসামগ্রী নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়সমূহ:
মেঝের নির্মাণসামগ্রী নির্বাচনে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়:
১। প্রাথমিক খরচ (Initial cost)। ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুসারে এবং দালানের ধরন অনুসারে মালামালের খরচ, হওয়া উচিত। খরচ যতদূর সম্ভব কম হওয়া উচিত।
২। সৌন্দর্য (Appearance) ও মেঝে নির্মাণে এমন ধরনের মালামাল ব্যবহার করা উচিত যেন উজ্জ্বল পৃষ্ঠ প্রদান করে। ব্যবহারকারীদের পছন্দ অনুসারে মেঝে হওয়া উচিত।
৩। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাযোগ্য (Cleanliness)। সহজে পরিষ্কার করা যায় এমন মেঝে এবং অশোষক পৃষ্ঠ হওয়া উচিত।
৪। স্থায়িত্ব (Durability): শক্তিশালী, দীর্ঘস্থায়ী এবং ক্ষয় প্রতিরোধে সক্ষম এমন নির্মাণসামগ্রী মেঝেতে ব্যবহার করা উচিত।
৫। আর্দ্ররোধিতা (Damp resistance): দালানে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এমন নির্মাণসামগ্রী দিয়ে মেঝে তৈরি করা উচিত, যাতে আর্দ্রতা প্রতিরোধে যথেষ্ট সহায়ক হয়।
৬। শব্দরোধিতা (Sound insulation) : মেঝে এমন হওয়া উচিত, যেন ব্যবহারকারীদের দ্বারা সৃষ্ট শব্দকে প্রতিরোধ করতে পারে। ৭। তাপমাত্রারোধিতা (Thermal insulation): ভালো তাপমাত্রারোধক মালামাল ব্যবহার করে মেঝে নির্মাণ করা উচিত।
৮। অগ্নিরোধিতা (Fire resistance): অগ্নিরোধক মালামাল ব্যবহার করে মেঝে নির্মাণ করা উচিত।
৯। মসৃণতা (Smoothness) : মালামাল দ্বারা নির্মিত মেঝে পৃষ্ঠ এমন মসৃণ হবে যেন অপিচ্ছিল হয়।
১০। কাঠিন্য (Hardness): অল্প খরচে এবং সহজে মেরামত করা যায় এমন মালামাল ব্যবহার করা উচিত।
আপার ফ্লোর নির্মাণে বিবেচ্য বিষয়সমূহ (Choice of construction for upper floor) :
আপার ফ্লোর নির্মাণে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়:
১। বিল্ডিং নির্মাণের প্রকার (General type of building construction)
২। মেঝের লোড় (Flooring loads or amount and type of floor loading)
৩। বিল্ডিং এর প্ল্যান (Plan of building)
৪। প্রাথমিক খরচ (Initial cost)
৫। অগ্নিরোধিতা (Fire resistance)
৬। শব্দরোধিতা (Sound insulation)
৭। ওজন এবং মেঝের অবস্থান (Weight and position of floor)
৮। দালানের ব্যবহার (Function or use of building)
৯। সিলিং এর ধরন (Type of ceiling)
১০। ওয়্যারিং সারফেস (Wearing surface)।
১। বিল্ডিং নির্মাণের প্রকার:
যে ধরনের মালামাল ব্যবহার করা হয়, মেঝের নামকরণও সে অনুযায়ী হবে। নিম্নে মেঝের সমন্বয় দেখানো হলো:
(ক) বিম, গার্ডার, কলাম কাঠের হলে মেঝেও কাঠের হবে।
(খ) স্টিল ফ্রেমের দালান হলে মেঝে সাধারণ কংক্রিট, আর.সি.সি বা আর.সি.সি. রিবড এর হবে।
(গ) আর.সি.সি. ফ্রেমের দালান হলে মেঝে সাধারণ কংক্রিট, আর.সি.সি. বা আর.সি.সি. রিবড এর হবে।
(ঘ) দালান ম্যাশনরির হলে মেঝে কাঠের, কংক্রিট, স্টিল জয়েস্ট, আই-বিম (I-beem) এবং স্ল্যাব, প্রিকাস্ট কংক্রিট ইত্যাদি ধরনের মেঝে হবে।
২। মেঝের লোড:
মেঝে নির্মাণে লোডের তীব্রতা এবং লোডের ধরন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। যে-কোনো ধরনের মেঝে নির্মাণে হালকা লোড বিবেচনা করতে হবে। আর ভারী লোডের জন্য বিশেষ ধরনের মেঝে নির্মাণ করতে হয়। যেমন, হালকা লোডের জন্য স্টিল জয়েস্টসহ পাতলা পাথর স্ল্যাব মেঝে সুবিধাজনক। অপরদিকে, ভারী লোডের জন্য বিম এবং আর.সি.সি. স্ল্যাব। মেঝে করতে হয়। ফ্লাট স্ল্যাব, হালকা লোডের জন্য মোটেও সুবিধাজনক নয়।
৩। বিল্ডিং এর প্ল্যান:
যদি বিল্ডিংকে কয়েকটি প্যানেলে বিভক্ত করা যায়, তবে ফ্লোর সিস্টেম নির্বাচন করা সুবিধা হয়। যেমন- স্প্যান দৈর্ঘ্য ও মিটারের মধ্যে হলে স্বল্প ও মাঝারিগুলোডের ক্ষেত্রে টিম্বার ফ্লোর এবং বেশি লোডের ক্ষেত্রে আর.সি.সি. প্ল্যাব ফ্লোর নির্মাণে সুবিধা হয়। আর স্প্যান দৈর্ঘ্য ও থেকে ৩ মিটারের মধ্যে হলে মাঝারি লোডের ক্ষেত্রে আর.সি.সি, স্লাব ফ্লোর এর বেশি লোডের ক্ষেত্রে আর.সি.সি. বিম এবং স্ল্যাব ফ্লোর সুবিধাজনক। আর স্প্যান দৈর্ঘ্য 6 থেকে 10 মিটার এর মধ্যে, মাঝারি লোডের ক্ষেত্রে আর.সি.সি. বিম এবং স্ল্যাব ফ্লোর ও বেশি লোডের ক্ষেত্রে আর.সি.সি. রিবড ফ্লোর, প্রিকাস্ট ফ্লোর বা ফ্লাট প্ল্যাব সুবিধাজনক।
৪। প্রাথমিক খরচ:
মেঝের ধরনের উপর প্রাথমিক খরচ নির্ভর করে। যেমন- যেখানে কাঠ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় না সেখানে কাঠের মেঝেতে খরচ বেশি পড়ে। অপরদিকে, পাহাড়ি এলাকায় কাঠ এবং পাথর প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় বলে সেখাঢ়ে
কাঠ বা পাথরের মেঝেতে খরচ কম হয়।
৫। অগ্নিরোধিতা:
মেঝে অগ্নিপ্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে। এজন্য অগ্নিপ্রতিরোধক মালামাল ব্যবহার করে মেঝে নির্মাণ কর উচিত। আবাসিক দালানে কাঠের মেঝে নির্মাণ স্বল্পব্যয়সাপেক্ষ, সেখানে অগ্নিপ্রতিরোধক বিবেচ্য বিষয় নয়। অপরদিকে, গুদাম ঘর • বাণিজ্যিক ভবন, শিল্পকারখানা ইত্যাদিতে আগুন লাগার সম্ভাবনা বেশি থাকে, সেজন্য ঐ সমস্ত স্থানের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যে অগ্নি প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা হয়।
৬। শব্দরোধিতা:
শব্দনিরোধক মালামাল ব্যবহার করে মেঝে নির্মাণ করা উচিত। সলিড কংক্রিটের মেঝে যদি পর্যাপ্ত পুরুত্ব এব ওজনের হয় তবে শব্দ প্রতিরোধক হিসাব কাজ করে। তা ছাড়া হালকা কংক্রিট বা সেলুলার কংক্রিটও শব্দ প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে। ৭। ওজন এবং মেঝের অবস্থানঃ মেঝের ওজন যদি বেশি হয়, তবে সুপার স্ট্রাকচার এবং ভিত্তির খরচের উপর প্রভাব বিস্তা করে। অপ্রদিকে, হালকা কংক্রিট এবং সেলুলার কংক্রিট এর মেঝের ওজন কম হয়। মেঝের অবস্থান যেমন- নীচতলা, একতলা দু’তলা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে মেঝে ডিজাইন করা হয়।
৮। দালানের ব্যবহার:
বিল্ডিংকে কী কাজে ব্যবহার করা হবে, তার উপর নির্ভর করে মেঝে নির্মাণ করা হয়। তাই লোড অগ্নিরোধিতার মাত্রা, শব্দরোধিতার মাত্রা ইত্যাদি বিবেচনা করে মেঝের ধরন নির্বাচন করা হয়।
৯। সিলিং এর ধরন :
সাধারণ টিম্বার জয়েস্ট ফ্লোর, ফ্লাট স্ল্যাব ফ্লোর, রিবড ফ্লোর ইত্যাদিতে সমতল সিলিং এবং কংক্রি মেঝে যদি বিম ও গার্ডার দ্বারা সাপোর্ট দিয়ে নির্মাণ করা হয় তবে সেক্ষেত্রে ঝুলন্ত সিলিং প্রদান করা হয়।
১০। ওয়্যারিং সারফেস:
ফ্লোর সিস্টেম নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ওয়্যারিং সারফেস গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে ওয়্যারিং সারফেস এব বেইস বা সাব-বেইস এর সমন্বয় দেখানো হলো:
(ক) কংক্রিট, কর্ক, লিনোলিয়াম, অ্যাসফাল্ট টাইল, প্লাস্টিক টাইল, রাবার, সিরামিক টাইল ইত্যাদি ওয়্যারিং সারফেস হিসাে প্রদান করা হয় কংক্রিট সারফেসের উপর।
(খ) ওয়্যারিং সারফেস হিসাবে কাঠের ফ্লোরিং প্রদান করা হয় হালকা কাঠের জয়েস্ট এবং ভারী কাঠের মেঝের উপর। মেঝের সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ (Advantages and disadvantages of floors) 1
(ক) সলিড ফ্লোর: যে-সকল ফ্লোর সর্বত্রই সমপুরুত্বে এবং একই জাতীয় পদার্থ দ্বারা তৈরিকৃত, তাকে সলিড ফ্লোর বলে যেমন- সিমেন্ট কংক্রিট ফ্লোর, প্রিকাস্ট কংক্রিট ফ্লোর, ফ্লাগ স্টোন ফ্লোর ইত্যাদি।
সুবিধা :
১। এটা শক্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী।
২। সহজে নির্মাণ করা যায়।
৩। নির্মাণখরচ তুলনামূলক কম।
৪। এটা পানিশোষী নয়, এ কারণে আর্দ্রতা প্রতিরোধে সক্ষম।
৫। মসৃণ এবং সুন্দর পৃষ্ঠ প্রদান করে। ৬। সহজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা যায়।
অসুবিধা:
১। সতর্কতার সাথে তৈরি না করলে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন করা যায় না।
২। নষ্ট হলে Patch work (জোড়াতালি কাজ) এর মাধ্যমে ভালোভাবে মেরামত করা যায় না।
(খ) হলো ফ্লোর (Hollow floor) :
কম্পোজিট ফ্লোরের টেনশন জোনের কংক্রিটের অপচয় রোধ করতে হলে এ জাতীয় ফ্লোর নির্মাণ করা হয়। হলো টাইলড হচ্ছে প্রিকাস্ট ফ্লোর জাতীয় মেঝে।
সুবিধা:
১। হালকা লোড এবং ছোট স্প্যানের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক।
২। ওজন অনেক কম হয়।
৩। শব্দ এবং অগ্নিপ্রতিরোধ গুণসম্পন্ন।
৪। ইলেকট্রিক এবং প্লাম্বিং কাজে কনসিল করতে সুবিধা হয়।-
৫। ভালো থার্মাল গুণসম্পন্ন, যার ফলে গরমের দিনে রুম ঠান্ডা থাকে।
৬। খরচ তুলনামূলক কম।
অসুবিধা:
১। বেশি লোড বা কেন্দ্রীভূত লোডের ক্ষেত্রে এ ফ্লোর নির্মাণ জটিল এবং খরচও বেশি।
(গ) কম্পোজিট ফ্লোর: বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে তৈরিকৃত ফ্লোরকে কম্পোজিট ফ্লোর বলে। টেনশন প্রতিরোধ করার জন্য এম.এস. রড ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন প্রকার আর.সি.সি. ফ্লোরই কম্পোজিট ফ্লোর হিসাবে পরিচিত।
সুবিধা:
১। দীর্ঘ স্প্যানের জন্য সুবিধাজনক।
২। যে-কোনো ধরনের লোডের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক।
৩। এটা দীর্ঘ স্থায়ী।
৪। উত্তম শব্দ ও অগ্নিপ্রতিরোধী
৫। ভালো থার্মাল ইনসুলেশন গুণসম্পন্ন।
৬। সমতল সিলিং পাওয়া যায়।
৭। নির্মাণপদ্ধতি সহজ।
অসুবিধা:
১.। বিভিন্ন উপাদানের সাহায্যে নির্মাণ করা হয় বলে খরচ বেশি পড়ে।
২। নষ্ট হলে মেরামত করা অসুবিধা।
৩। এ জাতীয় মেঝের ওজন বেশি।
ফ্লোর নির্মাণকালীন সময়ে পরিদর্শনের বিষয়সমূহ:
ফ্লোর নির্মাণকালীন সময়ে পরিদর্শনের বিষয়সমূহকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন-
১। সাটারিং পর্যবেক্ষণ,
২। রিইনফোর্সমেন্ট পর্যবেক্ষণ,
৩। কংক্রিট ঢালাই পর্যবেক্ষণ
৪। ফিনিশিং কাজ পর্যবেক্ষণ।
১। সাটারিং পর্যবেক্ষণঃ সাটারিং পর্যবেক্ষণে নিম্নের বিষয়সমূহ দেখা প্রয়োজন।
(ক) সাটারিং মজবুত হয়েছে কি না অর্থাৎ ফ্লোর লোড, শ্রমিকদের এবং মালামালের লোড বহনে সক্ষম কি না।
(খ) সমতল ও নিশ্ছিদ্র সাটারিং হয়েছে কি না।
(গ) সাটারিং এর উপর অভেদ্য কোটিং লাগানো এবং যথাযথ স্লোপ (যদি প্রয়োজন হয়) রাখা হয়েছে কি না।
২। রিইনফোর্সমেন্ট পর্যবেক্ষণঃ রিইনফোর্সমেন্ট পর্যবেক্ষণে দেখার বিষয়সমূহঃ
(ক) রিইনফোর্সমেন্টের আকার, আকৃতি এবং পরিমাণ শিডিউল মোতাবেক হয়েছে কি না।
(খ) রিইনফোর্সমেন্ট মরিচামুক্ত এবং ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না।
(গ) ক্ষেত্র অনুযায়ী রিইনফোর্সমেন্ট এর অবস্থান ঠিক হয়েছে কি না।
৩। কংক্রিট ঢালাই পর্যবেক্ষণ: কংক্রিট ঢালাই পর্যবেক্ষণের বিষয়সমূহঃ
(ক) কংক্রিটের উপাদানসমূহ সঠিক মানে ও সঠিক অনুপাতে দেয়া হচ্ছে কি না।
(খ) ব্যাচিং, মিক্সিং, ট্রান্সপোর্টিং, প্রেসিং, কম্প্যাকটিং ইত্যাদি যথাযথভাবে হচ্ছে কি না।
(গ) গ্রাউটিং সহযোগে জয়েন্টিং করা হয়েছে কি না।
৪। ফিনিশিং কাজ পর্যবেক্ষণঃ ফিনিশিং কাজ পর্যবেক্ষণের বিষয়সমূহঃ
(ক) নির্মাণকাজ শেষে যথাযথ কিউরিং করা হচ্ছে কি না।
(খ) কিউরিং শেষে সাটারিং নিয়ম অনুযায়ী খোলা এবং অপসারণ করা হয়েছে কি না।
দেয়াল ও ছাদ (Walls & roofs) :
খাদ্যশিল্প কারখানার দেয়াল ও ছাদ নির্মাণের জন্য কী ধরনের বস্তু বা ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হবে তা নির্ভর করে সেটি ক ধরনের শি. বাৎ সেখানে কী ধরনের পণ্য উৎপাদিত হবে তার ওপর। তবে এক্ষেত্রে ইট, বালু, সিমেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করে পাক দেয়াল হোক অথবা কালার কোট করা মেটালশিট/টিনপ্লেট ব্যবহার করা হোক, খেয়াল রাখতে হবে যেন তাতে কোনো ফাটল বা ছিদ্র না থাকে এবং সেখানে কোনো অণুজীব আক্রমণ করতে না পারে। তা ছাড়া এমন কোনো রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না, য খাদ্যের সাথে মিশে খাদ্যদ্রব্য দূষিত করতে পারে।
৩.৬ বিল্ডিং ডিজাইনের সাধারণ বিবেচ্য বিষয় (General considerations in building design) :
বিল্ডিং-এর ডিজাইন পরিকল্পনায় বিবেচ্য বিষয়গুলো নিম্নে দেয়া হলো:
১। দূষিত পদার্থগুলো যে এলাকায় থাকবে সে এলাকা প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা থেকে দূরে থাকবে।
২। মেঝের সন্তোষজনক ব্যবহার, সহজতর গৃহব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ সামগ্রীর ব্যবস্থাপনা ও উত্তম আলোকিত ব্যবস্থার জন্য বড় ছাদবিশিষ্ট একতলা বিল্ডিং বেশি উপযোগী।
৩। বিল্ডিং-এর ভেতরের দেয়াল হবে মসৃণ যাতে সহজে পরিষ্কার করা যায়, এতে কোনোরকম ছিদ্র, ফাটা ইত্যাদি থাকবে এবং ঝকঝকে টাইলস ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪। বিল্ডিং-এ খাড়া কোণ (Angle) থাকবে না এবং কৌণিক আকার যদি পরিত্যাগ করা না যায় তবে তা হবে উপবৃত্তাকার।
৫। ফলস সিলিং থাকবে না।
৬। পানি-অপ্রবেশ্য, অ্যাসিডরোধী, রাসায়নিক বিক্রিয়ারোধী সিরামিক টাইলস দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার মেঝে তৈরি করতে হবে।
৭। ধাতব প্লেট নির্মিত মেঝে তুলনামূলকভাবে বেশি ভারবহন করতে পারে।
৮। প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার মেঝেতে কিছুটা ঢাল (Slope) থাকবে যাতে পানি ও পানিজাতীয় পদার্থ সহজে নিষ্কাশিত হয়।
৯। নর্দমার লাইনের শেষের দিকে ছাঁকনি দেয়া থাকবে যাতে ইঁদুর ঢুকতে না পারে।
১০। পর্যাপ্ত বায়ু আসা-যাওয়ার (Ventilation) ব্যবস্থা থাকবে।
১১। বায়ু আসা-যাওয়ার পথ ছাঁকনিযুক্ত থাকবে যাতে কীটপতঙ্গ, পাখি ইত্যাদি বিল্ডিং এর ভেতর প্রবেশ করতে না পারে।
১২। পজিটিভ চাপযুক্ত ভেন্টিলেশন সিস্টেম থাকবে যাতে শুধুমাত্র বিশুদ্ধ বায়ু অবস্থান করে। ১৩। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে।
১৪। কারখানার জন্য পরিকল্পনা এমন থাকবে যে, ব্যবহৃত সামগ্রী বা পদার্থগুলো সহজেই একক্ষেত্র থেকে অন্যক্ষেত্রে স্থানান্তরিত হতে পারে।
আরও দেখুন :