চানাচুর তৈরি করা

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় চানাচুর তৈরি করা

চানাচুর তৈরি করা

প্রাসঙ্গিক তথ্য :

চানাচুর অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্য। সব বয়সের মানুষের কাছে এটি অতি মুখরোচক ও মজাদার। অতি প্রাচীনকাল থেকে এটি আমাদের সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে। মেহমান আপ্যায়নে চানাচুরের বিকল্প নেই। তাছাড়া বাঙালি সমাজে চা কিংবা কফির সাথে চানাচুরের জুড়ি নাই। চানাচুর প্রস্তুতির উপকরণসমূহ ছোলার ডাল, মটর, মুগডাল, চিড়া ইত্যাদি উদ্ভিদজাত শস্যসামগ্রী খোলা বাজারে সহজেই পাওয়া যায়।

তাছাড়া চানাচুর প্রস্তুতির সরঞ্জাম সহজলভ্য। গরিব মহিলা বা শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষিত ছেলেমেয়েরা নিজ গৃহে চানাচুরের ক্ষুদ্র ব্যবসা উদ্যোগ গ্রহণ করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নে নিয়োজিত হতে পারে।

উপাদান :

চানাচুর তৈরি করা

 

সহায়ক উপকরণ :

চানাচুর তৈরি করা

 

চানাচুর তৈরি করা

 

চানাচুর তৈরি করা

 

চানাচুর তৈরির জন্য নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:

১. ছোলার বেসনের সাথে অল্প পরিমাণে পানি মিশাতে হবে যেন খামিরটি অল্প শক্ত হয়।

২. এর সাথে রং, ডিম, সাইট্রিক এসিড এবং লবণ মিশিয়ে ডাইসে নিতে হবে।

৩. চুলায় কড়াই দিয়ে সয়াবিন তেল জ্বাল দিতে হবে।

৪. তেল ফুটে উঠলে তেলের কড়াইয়ের উপর একজন সহকারীকে সাথে নিয়ে চিকন ঝুড়ি তৈরির ডাইস ধরতে হবে।

৫. অল্প পরিমাণ খামির নিয়ে ডাইসের উপর চাপ দিলে চিকন ঝুরি গুলো গরম তেলে পড়বে এবং সঙ্গে সঙ্গে বড় হাতাওয়ালা ছিদ্রযুক্ত চামচ দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়াচাড়া করতে হবে।

৬. ভাজা হয়ে এলে চামচ দিয়ে তুলে তেল ঝরার জন্য ছিদ্রযুক্ত ট্রেতে রাখতে হবে।

৭. একই পদ্ধতিতে মোটা ঝুরি, গাটিয়া, পাপড় ও বুন্দিয়া আস্তে আস্তে সতর্কতার সাথে সময় নিয়ে ভাজতে হবে।

৮. চিনা বাদামের খোসা ফেলে কিছু সময় পানিতে ভিজিলে নিতে হবে। তারপর পানি ঝরিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে।

৯. মটর ডাল প্রায় ৫-৭ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে তারপর পানি ঝরিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে।

১০. চিড়াগুলো পরিষ্কার করে তেলে ভেজে নিতে হয়।

১১. একটি টেবিলের উপর পলিথিন কাগজ বিছিয়ে তার উপর প্রস্তুতকৃত ঝুড়ি, বাদাম, ডাল, চিড়া, জিরার গুঁড়া, ধনের গুঁড়া ও মরিচের গুঁড়া নেওয়া হয়। সব মিক্সার মেশিনে নিয়ে বা হাত দ্বারা ভালোভাবে মিশানো হয় ।

১২. বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন মাপের পলিব্যাগে ভরে সিল করতে হবে। এভাবে চানাচুর তৈরি হয়।

সতর্কতা :

১. ঝুরি যেন গরম তেলে পুড়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

২. বুন্দিয়া তৈরির খামির তরল গোলার মতো করতে হবে।

লুর চিপস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি করা

প্রাসঙ্গিক তথ্য :

বাংলাদেশে আলু একটি সম্ভাবনাময় ফসল। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় আলুর উৎপাদন বহু গুণ বেড়ে গেছে। এখন আলু থেকে উৎপাদিত পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় কমদামে দেশে ও বিদেশে বাজারজাত করা যেতে পারে। সব ধরনের আলু থেকে উৎকৃষ্ট মানের আলুর চিপস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হবে না।

এজন্য সুনির্দিষ্ট জাতের আলু নির্বাচন করতে হবে। আমাদের দেশের Cold Storage বা হিমাগার গুলোতে শুধু খাবার আলু সংরক্ষণ করা হয়। বর্তমানে চিপস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের জন্য ভিন্ন ধরনের হিমাগারের প্রয়োজন হবে। চিপস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরির জন্য উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ বিশেষজ্ঞ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।

আলুর চিপস

উপাদান

চানাচুর তৈরি করা

 

সহায়ক উপকরণ

 

চানাচুর তৈরি করা

 

চানাচুর তৈরি করা

চিত্র : আলুর চিপস

আলুর চিপস তৈরি করার জন্য নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে :

১. নির্বাচিত বড় বড় রোগমুক্ত খোসা ছাড়ানো আলু পরিষ্কার পানিতে চুবিয়ে রাখতে হবে।

২. ছুরি বা স্লাইসারের সাহায্যে ১-১.৫ মিলি. পুরু করে আলুর চিপস কাটতে হবে এবং লবণ পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে।

৩. স্লাইসগুলো চালুনি বা বাঁশের চাটাইয়ের উপর রেখে পানি ঝড়াতে হবে। স্লাইসগুলো কিছুদিন সংরক্ষণ করতে হলে ব্লাঞ্চিং করে পটাশিয়াম মেটা বাইসালফেট (KMS) দ্রবণে ১০ মিনিট ডুবিয়ে নিতে হবে ।

৪. কড়াইতে তেল গরম হলে স্লাইসগুলো ছেড়ে দিয়ে ছিদ্রযুক্ত হাতা দিয়ে উল্টে পাল্টে দিতে হবে।

৫. আলুর স্লাইসগুলো বাদামি হলে চিপসগুলো হাতার সাহায্যে তেল ঝরিয়ে ট্রে বা কাগজের শিটের উপর রাখতে হবে।

৬. চিপস ঠাণ্ডা হওয়ার পূর্বেই লবণের গুঁড়া ছড়িয়ে দিতে হয়। যাতে চিপসের গায়ে লবণ বসে যায়।

৭. ডায়মন্ড ও কার্ডিনাল জাতের আলু থেকে চিপস ভালো করা যায়।

৮. আলুর মতো মিষ্টি আলুর ও চিপস তৈরি করা যায়।

আলুর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই

উপাদান

 

চানাচুর তৈরি করা

 

সহায়ক উপকরণ

১ ছুরি
২ ছিদ্রযুক্ত হাতা
৩ চুলা
৪ কড়াই ও চালুনি
৫ ট্রে / কাগজের শিট

 

এগ্রোবেসড্ ফুড 157 চানাচুর তৈরি করা

চিত্র : আলুর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই

আলুর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি করার জন্য নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে :

১. পরিপুষ্ট ও নির্দোষ বড় বড় আলু বেছে নিতে হবে।

২. আলু ধুয়ে শুকিয়ে খোসা ছিলে নিতে হবে।

৩. ছুরির সাহায্যে ১ সে.মি. প্রস্থ ও ১ সে.মি. পুরু এবং যতটুকু সম্ভব লম্বা করে ফালি কাটতে হবে।

৪. ফালিগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে চালুনিতে উঠায়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

৫. কর্তিত ফালিগুলোকে গরম পানিতে আধা সিদ্ধ করে শর্করার হার কমিয়ে তেলের শোষণতা ৬% এ নামিয়ে আনতে হবে ।

৬. তারপর ফালিগুলো লবণ, গোলমরিচ ও লাল মরিচের গুঁড়ো ও সামান্য পানি দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে।

৭. কড়াইতে তেল বা ঘি গরম করে তাতে ফালিগুলো ঢেলে দিয়ে ওলটপালট করে ৩-৫ মিনিট ভাজতে হবে।

আরও দেখুন : 

Leave a Comment