আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় খাদ্য প্রাণরসায়নের সুযোগ ব্যাখ্যা , যা খাদ্য প্রাণরসায়নের মৌলিক ধারণা অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
খাদ্য প্রাণরসায়নের সুযোগ ব্যাখ্যা
গত শতাব্দী ছিল ভৌত বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির। এ শতাব্দী হতে যাচ্ছে প্রাণরসায়নের। বিজ্ঞানের এ দিকটা এখনও মানুষের কাছে বেশিরভাগ অজানা। প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে।
এখনও এইডস, ক্যান্সারের মতো মরণঘাতি রোগের কোনো কার্যকর ঔষধ আবিষ্কার হয় নি। তাই সারা বিশ্বে প্রাণরসায়ন নিয়ে চলছে প্রচুর গবেষণা।
আগামী শতাব্দীর সব চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করতে আমাদের দেশেও প্রাণরসায়নের গবেষণা ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। একইসাথে খাদ্য প্রাণরসায়নের গবেষণার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষিতে উৎপাদিত পণ্যগুলো যথাযথভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সারা বছর ব্যবহার করা যায়। এসব প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বিদেশে রপ্তানি করেও ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। এজন্য প্রাণরসায়নের গবেষণার মাধ্যমে নতুন- পদ্ধতিতে অধিক টেকসই, অধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য প্রস্তুত করতে হবে।
প্রাণরসায়নের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদনশীল, পুষ্টি ধারণক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। একইভাবে গবেষণার মাধ্যমে অধিক কার্যকর এনজাইম’ প্রস্তুত সম্ভব, যা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ আরো সহজতর করবে।
খাদ্য প্রাণরসায়নে ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের গুণাগুণ ঠিক রেখে খাদ্য সংরক্ষক কম ব্যবহার করে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব।
কৃত্রিম খাদ্য সংরক্ষক (Food Additive) এর ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে প্রাকৃতিক খাদ্য সংরক্ষক এর ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন প্রাণরসায়নের গবেষণা।
ইতোমধ্যে এদেশে প্রাণরসায়নের গবেষণা শুরু হয়েছে। এদেশে প্রাণরসায়নিক গবেষণার উল্লেখযোগ্য সাফল্য হলো পাটের জিন বিন্যাস আবিষ্কার।
বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান এবং জিন প্রকৌশল ও জীব প্রযুক্তি বিভাগের এক দল গবেষক পাটের জন্মসূত্র আবিষ্কার করেন, যা সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় এদেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে খাদ্য উৎপাদনশীলতা ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের উপর খাদ্য প্রাণরসায়নের গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে।
আরও পড়ূনঃ