সরিষা থেকে পাউডার ও কাসুন্দি

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় সরিষা থেকে পাউডার ও কাসুন্দি

সরিষা থেকে পাউডার ও কাসুন্দি

 

সরিষা থেকে পাউডার ও কাসুন্দি

 

ভূমিকা :

সরিষা থেকে খাদ্য :

ভারতীয় উপমহাদেশে সরিষা মিলিং করা তেল অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রধানত রান্নার কাজে সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়। গ্লুকোসিনোলেট (Glucosinolate )-এর জন্য সরিষার তেল বাঁঝযুক্ত হয়। সরিষার তেলে আইসো থায়োসায়ানেট তৈরি হলে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। ইরুসিক এসিড (Brucic Acid) মানবদেহের জন্য অপকারি।

বর্তমানে ‘ক্যানোলা’ নামে ইরুসিক এসিডযুক্ত জাতের সরিষার তেল পাওয়া যাচ্ছে। ক্যানোলার তেল মার্জারিন, সালাদ ও রান্নার তেল হিসেবে বিদেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরিষার তেলে ভেজান ইদানীং ঘানিতে ভাঙা খাটি সরিষার তেল প্রায় দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে।

এ সুযোগে বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সরিষার তেল বোতলজাত করে ক্রেতাদেরকে বিভ্রান্তিতে ফেলেছে। সাধারণত সরিষার তেলে যে সকল তেল ভেজাল দেয়া হয় তা নিম্নেরূপ-
ক) রেপসিড তেল
খ) নিম্নমানের পাম তেল।
গ) শেয়ালকাটা বীজের তেল
ঘ) কম দামী তিসির তেল
ঙ) তুলা বীজের তেল ইত্যাদি

সরিষা থেকে পাউডার ও কাসুন্দি :

ক) সরিষার পাউডার সরিষার : বীজ ভালো করে বাছাই করে রোদে শুকাতে হয়। তারপর তা কড়াইতে ভালোভাবে ভেজে নিতে হয়। শিল-পাটা বা গ্রাইন্ডিং মেশিনে সরিষার দানাগুলো ভেঙে নিতে হয়। এভাবে যে সরিষার গুঁড়া পাওয়া যাবে তা রান্নার কাজে, আচার ও স্যান্ডউইচ বানাতে ব্যবহার করা যায়। মাছ, মাংস ও শাকসবজি রান্নাতেও এই পাউডার ব্যবহার করা যায়।

 

সরিষা থেকে পাউডার ও কাসুন্দি

 

খ) সরিষার কাসুন্দি : কাসুন্দি তৈরির প্রধান উপকরণ হচ্ছে রাই সরিষা। এটি একটি প্রাচীন দেশীয় খাবার। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি হয় না বিধায় বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না। কাসুন্দি তৈরিতে সরিষা, হলুদ, মরিচ, আদা, জিরা, লবণ ও প্রিজারভেটিব এর প্রয়োজন হয়। প্রথমে সরিষা ধুয়ে ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়।

পরে তা শিলপাটায় বা গ্রাইন্ডিং মেশিন (Grinding Machine) এ গুঁড়া করে নিতে হয়। কড়াইতে পানি ফুটিয়ে তাতে সরিষার গুঁড়া, হলুদ, মরিচ ও জিরা গুঁড়া, আদা বাটা ও লবণ দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হয়। চুলা থেকে নামানোর পূর্বে প্রতি কেজিতে ২-৩ গ্রাম সাইট্রিক এসিড ( Citric acid) মিশাতে হয়।

সাইট্রিক এসিডের পরিবর্তে কয়েক টুকরা কাঁচা আম ব্যবহার করা যায়। এরপর কাসুন্দি মাটির পাতিলে ভরে পাতিলের মুখ বন্ধ করে ২-৩ দিন রেখে দিতে হয়। কাসুন্দি রাখার জন্য কাচের বৈয়াম গরম পানিতে জাল দিয়ে পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হয়। বোতলের উপরিভাগে ১/৮ ইঞ্জি জায়গা খালি রেখে বায়ুরোধী করে ছিপি আটকিয়ে রাখতে হয়।

কাসুন্দি ভর্তি বোতল ৫-৭ দিন রোদে দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়। কাসুন্দি খেতে যেমন ভালো তেমনি এর উপকারিতাও কম নয়। সর্দি, কাশির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

 

সরিষা থেকে পাউডার ও কাসুন্দি

 

মুখের রুচিও বাড়ায়। বর্তমানে অনেক খাবার প্রস্তুতকারী কোম্পানি বাণিজ্যিক ভাবে কাসুন্দি প্রস্তুত ও বাজারজাত করেছে। প্রায় সব ধরনের আচার তৈরিতে সরিষার তেল ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হয়।

আরও দেখুন : 

Leave a Comment