আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় লোহা শোষণের কৌশল , যা খনিজ পদার্থ অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
লোহা শোষণের কৌশল
খাদ্যের লোহা খুব কমই আমাদের শোষিত হয়। কিন্তু লৌহসমৃদ্ধ অজৈব লবণ সহজেই পৌষ্টিক নালিতে শোষিত হয়। প্রাণিজ উৎস থেকে প্রাপ্ত লোহার শোষণ হার উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত লোহার শোষণ হার অপেক্ষা বেশি।
পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের উপস্থিতিতে খাদ্যস্থ জৈব লোহা ফেরিক আয়ন মুক্ত করে। এ ফেরিক আয়ন খাদ্যে উপস্থিত ভিটামিন C, স্টিস্টাইন, গ্লুটাথিওন ইত্যাদি পদার্থের দ্বারা বিজারিত হয়ে ফেরাস আয়ন গঠন করে।
ফেরাস আয়ন পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে সক্রিয় বিশোষণ পদ্ধতিতে শোষিত হয় এরূপে প্রয়োজনীয় লোহার ২০-৩০% শোষিত হয়। ক্ষুদ্রাস্ত্র কোষে লৌহ, ফেরোঅক্সিডেজ উৎসেচকের সাহায্যে জারিত হয় ও অ্যাপোফেরিটিন নামক প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ফেরিটিন গঠন করে।
কোষে ফেরিটেন পর্যাপ্ত থাকলে লৌহ শোষণ হয় না। রক্তরসে লোহার ফেরাস আয়ন (Fe) ফেরো-অক্সিডেজ উৎসেচকের সাহায্যে জারিত হয়ে ফেরিক আয়ন (Fest) গঠন করে এবং B গ্লোবিউল বা অ্যাপোট্রান্সফেরিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ট্রান্সফেরিন রূপে বাহিত হয়।
অস্থিমজ্জায় রক্তরস থেকে ট্রান্সফেরিন ফেরাস আয়নে পরিণত হয়ে রক্তকণিকার জন্য হিমোগ্লোবিন গঠন করে। রক্তরসের লোহা যকৃৎ, প্লীহাতে ফেরিটিন ওহিমোসিডারিন রূপে সঞ্চিত হয়। যে সমস্ত কারণে লোহার শোষণ ব্যাহত হয় সেগুলো নিম্নরূপ-
১। খাদ্যে উপস্থিত অকজালিক অ্যাসিড অদ্রাব্য অক্সালেট গঠন করে লৌহ শোষণে ব্যাঘাত ঘটায়।
২। পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের অভাবে গোছার শোষণ হ্রাস পায়। ৩। চা, কফি বা কিছু সবজিতে পলিফেনল নামক জৈব যৌগ থাকে, যা লোহা শোষণে বাধা দেয়।
৪। ভিটামিন C ফেরিক আয়নকে ফেরাস আয়নে পরিণত করে শোষণে সাহায্য করে। ভিটামিন C-এর অভাবে লোহার শোষণ
ব্যাহত হয় ।
৫। ফসফেট ও ফাইটেট পদার্থের আধিক্যে অদ্রাব্য লৌহ যৌগঘটিত হওয়ার ফলে শোষণ ব্যাহত হয়।
আরও পড়ূনঃ