রান্নার উপকরণ মাপার পদ্ধতি : রান্নার উপকরণগুলোর পরিমাণ সঠিক হওয়া খুবই জরুরী। একেবারে মাষ্টার হয়ে ওঠার আগে পর্যন্ত পরিমাণ সঠিক হবার জন্য প্রচলিত মাপের পদ্ধতি মেনে উপকরণ মাপতে হয়। এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের রন্ধনশিল্পের কিংবদন্তি অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর তার “রান্না খাদ্য পুষ্টি”তে যে প্রয়োজনীয় মাপের পদ্ধতিগুলো দেখিয়েছেন, এখানে তা তুলে দেয়া হল।
Table of Contents
রান্নার উপকরণ মাপার পদ্ধতি [ রান্না খাদ্য পুষ্টি ]:
মেট্রিক পদ্ধতিতে ওজন ও দৈর্ঘ্যের মাপ:
মেট্রিক প্রণালীতে ওজনের একক গ্রাম এবং দৈর্ঘ্যের একক মিটার। এক গ্রাম খুব সামান্য ওজন অত্যন্ত কম ওজন মিলিগ্রামে এবং বেশি ওজন গ্রাম, কিলোগ্রাম ও কুইন্টালে নেয়া হয়। তরল পদার্থের পরিমাণ লিটারে প্রকাশ করা হয়।
১০০০ গ্রাম = ১ কিলোগ্রাম
১০০ কিলোগ্রাম = ১ কুইন্টাল
১ কেজি = ২.২ পাউণ্ড
১ কেজি = প্রায় ১ লিটার
৪ লিটার = ১ গ্যালন
এক কিলোগ্রাম ওজনকে সংক্ষেপে ১ কিলো বা ১ কেজি বলা হয়।
দৈর্ঘ্য মাপার একক:
১০ মিলিমিটার = ১ সেন্টিমিটার
১০০ সেন্টিমিটার = ১ মিটার
১ কিলোমিটার = ১০০০ মিটার
মেট্রিক পদ্ধতিতে ওজন নেয়ার জন্য বিভিন্ন মাত্রার বাটখারা আছে। বাটখারার পরিমাণগত মাত্রাগুলো হচ্ছে- ৫ গ্রাম, ১০ গ্রাম, ২০ গ্রাম, ৫০ গ্রাম, ১০০ গ্রাম, ২০০ গ্রাম, ৫০০ গ্রাম ও ১০০০ গ্রাম।
মনে করা যাক, বিস্কুট তৈরি করার জন্য কিভাবে ৩৭০ ও ৭৬৫ গ্রাম ময়দা মাপতে হবে। ৩৭০ গ্রাম ও ৭৬৫ গ্রাম মাপার জন্য নিম্নলিখিত ওজনের বাটখারা নিতে হবে। যেমনঃ
৩৭০ গ্রাম = ২০০ গ্রাম + ১০০ গ্রাম + ৫০ গ্রাম + ২০ গ্রাম
৭৬৫ গ্রাম = ৫০০ গ্রাম + ২০০ গ্রাম + ৫০ গ্রাম + ১০ গ্রাম + ৫ গ্রাম
মাপার জন্য কয়েকটি সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে যথা :
চা চা = চা চামচ
টে. চা. = টেবিল চামচ
সেঃ = সেলসিয়াস
মি. গ্রা. = মিলিগ্রাম
কেজি = কিলোগ্রাম
মি. মি. = মিলিমিটার
সে. মি. = সেন্টিমিটার
বিভিন্ন প্রকার মাপ ও ওজনের তালিকা
কাপের মাপ
৩ চা চা. = ১ টে. চা.
১৬ টে. চা. = ১ কাপ
১ কাপ [ 8 আউন্স
গ্রামের মাপ:
১০০০ মি.গ্রা. = ১ গ্রাম
১০০০ গ্রাম = কিলোগ্রাম
১০০০ কিলোগ্রাম = ১ মেট্রিক টন
বিভিন্ন ওজন ও মাপের সম্পর্ক
১ চা চা. = ৫ মিলি লিটার
১ টে. চা. = ১৫ মিলি লিটার
১ কাপ = ২৪০ মিলি লিটার
১ পাইন্ট = = ২.৫ কাপ
শুকনা খাদ্য মাপা:
চাল, আটা, ময়দা, চিনি, বেকিং পাউডার, গুঁড়া মসলা ইত্যাদি শুকনা খাদ্য কাপ বা চামচ দিয়ে মাপতে হলে মাপার পাত্রে উপকরণ হালকাভাবে ভরতে হবে। তারপর ছুরি বা কাঠি দিয়ে পাশের চিত্রের ন্যায় পাত্রের মুখ সমান করে। দিতে হবে। কাপ ঠেসে উঁচু করে ভরলে সব সময়ে সমান মাপ হয় না। কেক, বিস্কুট, প্যানকেক ইত্যাদি যেসব খাবারে বেকিং পাউডার ব্যবহার করা হয় সেই সব খাবার প্রস্তুত করার সময় উপকরণের মাপ ভুল হলে খাবার ভাল হয় না। চপ, কাটলেট, কালিয়া, কোরমা, পোলাউ, পিঠা সব রান্নার জন্যই উপকরণ মেপে নেয়া প্রয়োজন।
তরল ও নরম খাদ্য মাপা:
রান্নাঘরে তেল, ঘি, ডালডা, দুধ, দই, সিরকা, বাটা মসলা, সস ইত্যাদি কাপ ও চামচ দিয়ে মাপা যায়। বেশি পরিমাণে মাপার জন্য লিটারের পাত্র ব্যবহার করা যায়। আবার কোনও হাঁড়ি, গামলা, মোল্ড ইত্যাদি পাত্রের মাপ জানা না থাকলে পাত্রটি পানিতে ভরে সেই পানি কাপ দিয়ে মেপে নিলে পাত্রটির মাপ জানা যায়। তরল খাদ্য মাপার জন্য পাইন্ট এবং গ্যালনের পাত্রও ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: