আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় মশলার শ্রেণিবিভাগ ও পুষ্টিমান
Table of Contents
মশলার শ্রেণিবিভাগ ও পুষ্টিমান
মশলার শ্রেণিবিভাগ ও পুষ্টিমান
খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য যে সমস্ত সুগন্ধিযুক্ত উদ্ভিদজাত দ্রব্য খাদ্য তৈরির বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবহার করা হয়, সাধারণত তাদেরকেই মসলা বলে। প্রকার ভেদে উদ্ভিদের মূল, কাণ্ড, রূপান্তরিত কাণ্ড, কাণ্ডের বাকল, পাতা, ফুল, ফুলের পাপড়ি এবং ফল বা বিচি মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়।
সকল প্রকার মসলাকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়-
(ক) স্পাইসেস (Spices)
(খ) কন্ডিমেন্টস (Condiments) ও
(গ) কালিনারি হার্ব (Culinary herb)
(ক) স্পাইসেস :
খাদ্য রান্না করার সময় খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি, খাদ্যকে আকর্ষণীয় ও খাদ্যে সুগন্ধি আনার জন্য যেসকল উদ্ভিদ বা উদ্ভিদের অংশবিশেষ দ্রব্য প্রধান খাদ্যের সাথে যোগ করা হয়, সেগুলোকে স্পাইসেস বলে। যেমন- কাঁচামরিচ, শুকনা মরিচ, পেয়াজ, আদা, রসুন ইত্যাদি।
চিত্র : বিভিন্ন রকমের স্পাইসেস
(খ) কন্ডিমেন্টস :
খাদ্যকে সুগন্ধি, আকর্ষণীয়, রঙিন ও বিশেষ ঘ্রাণ সৃষ্টি করার জন্য রান্নার শেষ পর্যায়ে বা রান্নার পর যেসকল উদ্ভিদজাত দ্রব্য মিশানো হয় তাদের কন্ডিমেন্টস বলে। যেমন- এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা গোলমরিচ, জিরা ইত্যাদি।
চিত্র : বিভিন্ন রকমের কন্ডিমেন্টস।
(গ) কিউলিনারি হার্ব :
যেসকল উদ্ভিদজাত দ্রব্য রান্নার পর খাদ্য বা খাবারের টেবিল আকর্ষণীয় করার জন্য এবং স্বাদ বৃদ্ধির জন্য পরিবেশনের পূর্বে খাদ্যে মিশ্রণ বা যোগ করা হয়, তাকে কিউলিনারি হার্ব বলে। যেমন- ধনিয়া, বিলাতি ধনিয়া, পাতা পেয়াঁজ, কারিপাতা, পুদিনা পাতা, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি।
চিত্র : বিভিন্ন রকমের কিউলিনারি হার্ব ।
মশলার পুষ্টিমান :
আমরা যেসকল মসলা খাদ্যে ব্যবহার করে থাকি তন্মধ্যে কয়েকটি বেশ পুষ্টিগুণসম্পন্ন। বাকি মসলা তেমন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নয় তবে এ সকল মসলা সাধারণত খাদ্যের স্বাদ, গন্ধ ও রঙ বৃদ্ধিতে এবং খাদ্যকে আকর্ষণীয় করার কাজেই বেশি ব্যবহার হয়। যে সকল মসলা খাদ্যের স্বাদ, গন্ধ, ঘনত্ব বৃদ্ধি করে কিন্তু রং সৃষ্টি করে না সেগুলোকে ফ্লেভিনয়েডস (Flavinoids) বলে।
পুষ্টিমানের দিক দিয়ে প্রধান কিছু কিছু মশলার পুষ্টিমূল্য জানা থাকলেও বেশিরভাগ গৌণ মশলার পুষ্টিমানের কথা জানা যায় না। এ সকল গৌণ মসলা বিভিন্ন খাদ্যে খুব কম পরিমাণে ব্যবহার হয় বলে এগুলো পুষ্টিগুণের উৎস হিসেবে তেমন প্রভাব বিস্তার করে না। এসব গৌণ মসলায় বিশেষ ধরনের সুগন্ধি রাসায়নিক পদার্থ থাকে
যেমন- গোল মরিচে আছে পাইপারিন, জিরায় আছে কিউমিনালডিহাইড, লবঙ্গে আছে ইউজিনল, এলাচে আছে সিনেউল, বর্নিউল, তেজপাতায় আছে ইউজিনল এবং দারুচিনিতে আছে সিনামালডিহাইড ইত্যাদি যা ঐ সকল মশলার বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তৈরি খাদ্যের সংরক্ষণে ও গুণাগুণ রক্ষার্থে এদেরকে বেশি ব্যবহার করা হয়। নানা প্রকার আচার, চাটনি, কেচাপ, মোরব্বা প্রভৃতি তৈরিতে এবং এদের সংরক্ষণ গুণাগুণ বৃদ্ধিতে সাধারণত এসব মসলা ব্যবহার করা হয়।
নিম্নের সারণিতে বিভিন্ন মশলার পুষ্টিমান দেখানো হলো :
সারণি : বিভিন্ন মসলা ফসলের পুষ্টিমান (প্রতি ১০০ গ্রামে)।
আরও দেখুন :