আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ভুট্টা থেকে শিল্পজাত
Table of Contents
ভুট্টা থেকে শিল্পজাত
ভুট্টা শিল্পজাত দ্রব্য
বাংলাদেশে প্রতিবছরে ১৫-২০ হাজার টন স্টার্চ আমদানি করা হয়। সমপরিমাণ স্টার্চ তৈরি করতে ৩০-৪০ হাজার টন ভুট্টার প্রয়োজন। আমাদের দেশে ভুট্টা চাষ তেমন প্রসার লাভ করেনি বিধায় ভুট্টা ভিত্তিক শিল্পকারখানা এখনও বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠেনি। ভুট্টা থেকে নিম্নের শিল্প উপাদান তৈরি করা যায়-
১. স্টার্চ
২. কর্ন ফ্লেক্স
৩. ভুট্টার তেল
৪. বলবর্ধনকারী খাবার
৫. কনফেকশনারি দ্রব্য
৬. কর্ন সিরাপ
৭. টিনজাত দ্রব্য
৮. কারফিউরাল শিল্প
৯. ইথানল
১০. বিবিধ শিল্প
স্টার্চ :
ভুট্টার শুকানো দানা ৬৬-৭৮% স্টার্চ থাকে। ভুট্টাকে প্রক্রিয়াজাত করে সহজেই উক্ত স্টার্চ পাওয়া যায়। স্টার্চ টেক্সটাইল শিল্প, ভেষজ শিল্প, কাগজের মিল, এসবেস্টস বোর্ড, যন্ত্রাংশের ছাঁচ তৈরি ও ড্রাইসেল ব্যাটারি ইত্যাদি শিল্পে ব্যবহার হয়।
কর্নফ্লেক্স :
ভুট্টার শর্করাকে হাইড্রোলাইসিস করে কর্ন সিরাপ উৎপন্ন করা হয় যা মিষ্টি বৃদ্ধিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে বিভিন্ন প্রকার ডেক্সট্রিন, মালটোজ ও গ্লুকোজ বিদ্যমান থাকে। আরও ভালভাবে হাইড্রোলাইসিস করে বেশি পরিমাণ গ্লুকোজকে ভেঙে ফ্রুকটোজ উৎপন্ন করে যা একটি মিষ্টি যৌগ। দুধ ও চিনি দিয়ে ভিজানো কর্নফ্লেক্স শিশু ও কিশোরদের মজাদার খাবার।
কর্ন অয়েল :
ভুট্টার ভ্রূণ অপসারণ, নিষ্কাশন ও পরিশোধন করে বিশুদ্ধ ভুট্টার তেল বা কর্ন অয়েল পাওযা যায়। ভুট্টার তেলে কোলেস্টরেল নেই বললেই চলে। যুক্তরাষ্ট্রে এই তেলকে মেজোলা ওয়েল বলে। রান্না ছাড়াও ভুট্টার তেল গোলাবারুদ, রং, বার্নিশ, কৃত্রিম রাবার, সাবান, বেকারি সামগ্রী, মেওনেজ, মরিচারোধক দ্রব্য ইত্যাদিতে ব্যবহার হয়।
বলবর্ধনকারী খাবার :
হরলিক্স, মালটোভা, বুস্ট ইত্যাদি বলবর্ধনকারী খাবার তৈরিতে ভুট্টার দানা ব্যবহার করা হয়।
কনফেকশনারি দ্রব্য :
বিভিন্ন প্রকার রুটি, বিস্কুট, কেক ও কনফেকশনারি দ্রব্য তৈরিতে ভুট্টার গুঁড়া ব্যবহার হয়।
কর্ন সিরাপ :
ভুট্টার স্টার্চকে হাইড্রোলাইসিস করে গ্লুকোজ, ফুব্রোজ ও ডেক্সট্রিন ইত্যাদি কর্ন সিরাপ তৈরি করা হয়। এই সিরাপ খাবার শিল্প, চামড়া শিল্প, সাবান শিল্প ইত্যাদিতে ব্যবহার হয়।
টিনজাত ভুট্টা :
ভুট্টার অপরিপক্ক মোচাকে টিনজাত বা ক্যানিং করে খাওয়ার জন্য বাজারজাত করা হয়।
কারফিউরাল শিল্প :
ভুট্টার মোচা থেকে দানা ছাড়িয়ে নেওয়ার পর যে অংশ বাকি থাকে তাকে কব বলে । তা থেকে কারফিউরাল নামক রাসায়নিক দ্রব্য পাওয় যায়। যা দিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যাদি, কৃত্রিম রাবার, নাইলন, রেজিন ইত্যাদি তৈরি হয়ে থাকে।
ইথানল :
ভুট্টার স্টার্চকে গাজানো বা ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ায় ইথানল তৈরি করা যায়। ইথানলের সাথে পেট্রোল বা অকটেন মিশিয়ে গাড়ির জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব।
বিবিধ শিল্প :
ভুট্টায় জিন নামক তৃতীয় শ্রেণির আমিষ পাওয়া যায় যা দিয়ে কর্ক, বাঁধাই ও ছাপার কালি তৈরি হয়। ভুট্টার এমাইলোজ দিয়ে খাবার মোড়ক তৈরি করা যায়। এই খাবার মোড়ক না খুলেই রান্না করা যায় । ভুট্টার এমাইলোপেকটিন প্লাস্টিক, ফিল্ম, ফনোগ্রাফ রেকর্ডিং আঠা তৈরিতে ব্যবহার হয়।
চিত্র : ভুট্টা হতে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন ধরনের খাদ্য
আরও দেখুন :