ভুট্টার কাঁচা মোচা ভিত্তিক খাবার

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ভুট্টার কাঁচা মোচা ভিত্তিক খাবার

ভুট্টার কাঁচা মোচা ভিত্তিক খাবার

ভুট্টার কাঁচা মোচা ভিত্তিক খাবার

ঝলসানো ভুট্টার মোচা :

দানা নরম থাকা অবস্থায় ভুট্টার মোচার খোসা ছাড়াতে হয় তারপর কয়লার আগুনে ঝলসাতে হয়। আগুনের উপর রেখে তার উপর মোচা পোড়ালে ভালো হয়। তারপর তা খাওয়া যা এছাড়া গরম বালুতেও মোচা ঝলসানো যায়।

 

ভুট্টার কাঁচা মোচা ভিত্তিক খাবার

চিত্ৰ: ভুট্টা পোড়ানো বা ঝলসানে

সিদ্ধ ভুট্টা :

পানিতে ভুট্টার মোচা সিদ্ধ করে মোচা আলাদা করে নিতে হয়। কাঁচা মরিচ ও পেয়াজ কুচি কুচি করে কেটে ঘি দিয়ে ভাজতে হয়। এর সাথে সিদ্ধ ভুট্টার দানা, লবণ ও ধনে পাতা ছেড়ে দিতে হয়। কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে লেবুর রস দিয়ে পরিবেশন করতে হয়।

ভাজা ভুট্টা :

কচি ভুট্টার মোচা থেকে দানা আলাদা করতে হয়। দুধ গরম করে ফুটন্ত দুধে দানা গুলো ছেড়ে দিতে হয়। জ্বাল দেবার পর ভুট্টার দানা যখন দুধ চুষে নেয় বা দুখ যখন শুকিয়ে আসে তখন চুলা থেকে নামাতে হয়। কড়াইতে ঘি গরম করে জ্বাল দেওয়া ভুট্টার দানা দিয়ে ঘিয়ে ভেজে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করা হয়।

ভুট্টা ভাজি :

মোচা থেকে দানা ছাড়িয়ে নিয়ে চুলায় সিদ্ধ করতে হয়। নরম ও দৃঢ় হওয়া পর্যন্ত সিদ্ধ করতে হবে। কড়াইতে পেয়াজ কুচি করে কেটে তেল দিয়ে বাদামি করে ভাজতে হয়। তারপর আলুর টুকরা ছেড়ে দিয়ে সিদ্ধ করতে হয়। এ সময় প্রয়োজনমতো মসলা ও ভুট্টা দিয়ে নাড়তে হয়। পরিমাণমতো পানি দিয়ে ঢেকে ৩-৪ মিনিট চুলার রেখে পরিবেশন করা যায়।

থৈ ভুট্টা ভিত্তিক খাবার :

ভুট্টার থৈ :

ভুট্টার সকল জাতের দানা থেকে থৈ তৈরি করা যায় না। শুধুমাত্র থৈ ফুটা জাতের ভুট্টার দানা থেকে সুন্দর বৈ করা যার। প্রথমে থৈ ভুট্টার দানা ধুয়ে নিতে হয়। নিশ্চিত হতে হবে যে, দানার ১৪-১৫% আর্দ্রতা আছে। তবেই থৈ সর্বাধিক ফুলে উঠবে। বড় তলা বিশিষ্ট পাত্রে কিছু সয়াবিন তেল দিয়ে গরম করতে হয়।

 

ভুট্টার কাঁচা মোচা ভিত্তিক খাবার

চিত্র : পপকর্ন মেশিন

তেল গরম হলে (ধোঁয়া ওঠা পর্যন্ত) ৫০ গ্রাম ভুট্টার দানা পাত্রে ঢেলে দিয়ে সাথে সাথে ঢাকনা লাগিয়ে মুখ বন্ধ করে দিতে হয়। মুখবন্ধ করে পাত্রটি ধীরে ধীরে ঘুরাতে হয় যে পর্যন্ত খৈ ফুটার আওয়াজ বন্ধ না হয়। প্রয়োজনমতো লবণও দিয়ে নিতে হয়। খৈ ভাজা হলে ঠাণ্ডা করে পলি ব্যাগে প্যাকেট করে বাজারজাত করা হয়।

বর্তমানে ভুট্টার খৈ ভাজার ছোট যন্ত্র ভ্যানগাড়িতে বসিয়ে শহরে বন্দরে গরম গরম ভুট্টা ভেজে বিক্রি করা হয়। যা সকলের নিকট খুবই আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় উঠছে।

ভুট্টার মোয়া :

ভুট্টার মোয়া তৈরি অনেকটা মুড়ির মোয়া তৈরির মতোই। প্রথমে খৈ তৈরি করে নিতে হয়। তারপর একটি পাত্রে পরিমাণমতো পানি দিয়ে আখের গুড় জ্বাল দিতে হয়। প্রায় ৫-৭ মিনিট জ্বাল দেওয়ার পর ফুটন্ত গুড়ের মধ্যে খৈগুলো ছেড়ে দিতে হয়।

তারপর গরম পাত্রটি নামিয়ে দ্রুত হাতা দিয়ে নাড়তে হয় যেন গুড় সমানভাবে খেতে মেখে যায়। এবার গরম থাকতেই গুড় মাখানো খৈ হাতে নিয়ে মুঠ করে চেপে মোয়া তৈরি করতে হয়। মনে রাখতে হবে গরম গুড়ের আঠাতেই কেবল সুন্দর মোয়া তৈরি হয়। গুড় ঠাণ্ডা হয়ে গেলে মোয়া তৈরি করা যায় না।

ভুট্টার মুড়কি :

প্রথমে খৈ ভুট্টার দানা ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল ১০০ মিলি লিটার, গুড় ৩০০ গ্রাম ও লবণ পরিমাণমতো নিতে হয়। খৈ ভেজে নিতে হয়। মোয়া তৈরির মতো একই প্রণালিতে একটি পাত্রে গুড় জ্বাল দিতে হয়। ফুটন্ত গুড়ের ভিতর খৈ গুলো ছেড়ে দেওয়া হয় অথবা খৈ-এর মধ্যে গুড় ছেড়ে হাতা দিয়ে তাড়াতাড়ি ওলটপালট করে নাড়তে হবে।

গুড় ঠাণ্ডা হওয়ার আগেই খৈ এর সাথে সমস্ত গুড় মাখিয়ে ফেলতে হবে। কেননা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে গুড় খৈ এর গায়ে লাগে না। খৈ গুলোতে গুড় মাখায়ে ঝরঝরে করা হলে মুড়কি তৈরি হয়ে যায়। একইভাবে গুড়ের পরিবর্তে চিনি দিয়ে ভুট্টার মুড়কি তৈরি করা যায় ।

ভুট্টার নাডু :

খৈ ভাজার পর দেখা যায় কিছু কিছু ভুট্টার দানা খৈ হয় না। এ অফুটন্ত দানা কিছুটা গুঁড়া করে নিতে হয়। একটি পাত্রে পরিমাণমতো নরম গুড় বা ঝোলা গুড় বা শুকনো গুড়ের সাথে পানি মিশিয়ে ৬-৭ মিনিট জ্বাল দেওয়া হয়। তারপর ফুটন্ত গুঁড়ার মধ্যে ভুট্টার দানা ছেড়ে দিতে হয়।

 

ভুট্টার কাঁচা মোচা ভিত্তিক খাবার

চিত্র : ভূট্টার নাডু

এরপর পাত্রটি নামিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হয়। গরম থাকতেই হাতে তেল মেখে মুঠি করে গোলাকার নাড়ু তৈরি করা যায়। ভুট্টার গুঁড়ার সাথে তিলের গুঁড়া ও নারিকেল কোরা মিশিয়ে দিলে নাডু খুব মজাদার হয়।

আরও দেখুন : 

Leave a Comment