আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ভুট্টার আটা ও দানাভিত্তিক খাবার
Table of Contents
ভুট্টার আটা ও দানাভিত্তিক খাবার
ভুট্টার আটা ও দানাভিত্তিক খাবার
ভুট্টার আটার রুটি :
এই রুটি তৈরি করতে ভুট্টার আটা ও গমের আটা ৪:১ বা ২৪১ বা ১৪১ অনুপাতে মিশানো যায়। দুই ধরনের আটা মেপে একত্রে গরম পানি ও লবণ মিশিয়ে ভালো করে ডলে খামির তৈরি করতে হয়। খামির থেকে ছোট ছোট গোলা বা বল নিয়ে পিঁড়ি ও বেলনের সাহায্যে রুটি বেলে নিতে হয়। চুলায় তাওয়া গরম হলে রুটি সেঁকে নিতে হয় ।
ভুট্টার আটার পরোটা :
ভুট্টার আটা ১ ভাগ, গমের আটা ২ ভাগ, তেল বা ঘি, লবণ ও পানি পরিমাণ মতো নিতে হয়। তারপর রুটি বানানোর মতো খামির তৈরি করতে হয়। পিঁড়ি ও বেলনে বেলে চারকোণা ও একটু মোটা করে বেলতে হয়। তারপর ঘি বা তেলে একটু বাদামি করে ভেজে তুললেই পরোটা হয়ে যায় ।
আলু ভুট্টা রুটি :
এ রুটি তৈরি করতে ১০০ গ্রাম ভুট্টার আটার সাথে মাঝারি সাইজের ৪টি আলু নিতে হয়। ঘি ২০ গ্রাম, মরিচের গুঁড়া ১ চা চামচ, ও লবণ পরিমাণমতো নিতে হয়। আলু সিদ্ধ করে খোসা ছিলে চটকে নিতে হয়। ভুট্টার ময়দা, চটকানো আলু এবং সব মসলা একত্রে ডলে খামির তৈরি করতে হয়।
এরপর ছোট ছোট করে গোলা বা বল তৈরি করে রুটি বানাতে হয়। ঘি দিয়ে রুটির উভয় পিঠ সেঁকে নিতে হয়। প্রয়োজনে আরও ঘি বা তেল দিয়ে তাওয়ায় রুটি ভেজে নিতে হয়। খাওয়ার জন্য গরম থাকতে পরিবেশন করতে হয়।
ভুট্টার চাল খিচুড়ি :
এই খিচুড়ি তৈরি করতে কটি ভুট্টার দানা ১৫০ গ্রাম, চাল ৩০০ গ্রাম, ঘি আধাকাপ, আদা বাটা, সরিষা, লবণ ও পানি পরিমাণ নিতে হয়। চাল দু ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিতে হয়। হাঁড়িতে ঘি গরম করে সব শুকনা মশলা দিয়ে চাল ও ভুট্টা ছেড়ে দিতে হয়। অবশেষে লবণ, আদা বাটা এবং পানি দিতে হয়। চাল ও ভুট্টার দানা সিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে হয়। পানি শুকিয়ে নিচুড়ি ঝরঝরে হলে নামিয়ে পরম পরম পরিবেশন করতে হয়।
ভুট্টা পোলাও :
সিদ্ধ কচি ভুট্টার দানা ২৫০ গ্রাম, চাল ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ কুচি ও যি পরিমাণ মতো, স্বাভাবিক পোলাওর অন্যান্য মশলা দিয়ে পোলাও রান্না করতে হয় । চাল ধুয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হয়। ঘি গরম করে মশলা, চাল ও ভুট্টা একটু ভাজতে হয়। তারপর তিন কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে স্থান দিতে হয় চাল ও ভুট্টা সিদ্ধ হবার পর চুলা থেকে নামিয়ে পরম পরম পরিবেশন করতে হয়।
ভুট্টা পোরিজ বা কিরনি :
ফিরনি তৈরি করার জন্য ভাঙা ভুট্টা ৬০ গ্রাম, দুধ ১০০ গ্রাম, গুড় বা চিনি ৫০ গ্রাম, যি ৫০ গ্রাম এবং পানি পরিমাণমতো নিতে হবে। ভাঙা ভুট্টা পানিতে প্রায় ১ ঘণ্টার মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর পানি ঝরিয়ে ভুট্টা ঝলসাতে হবে যে পৰ্যন্ত উজ্জ্বল বাদামি রঙের না হয়।
ঘি গরম করে এই ভুট্টা আরও পাঁচ মিনিট ভাষাতে হবে। তারপর পানি দিয়ে কম তাপে সিদ্ধ করতে হয়। ভুট্টা নরম হলে চিনি বা গুড় দিয়ে ভালো করে মিশাতে হয়। তারপর চুলা থেকে নামাতে হয়। পরিবেশনের সময় দুধ মিশিয়ে খেতে হয়।
শিশুর পরিপুরক খাদ্য :
এই খাদ্য তৈরিতে ভূট্টার ময়দা ৬০ গ্রাম, ননীযুক্ত গুঁড়োদুধ ১৫ গ্রাম এবং চিনি ১০ গ্রাম নিতে হয়। ময়দা চেলে গুঁড়ো দুধ মিশাতে হয়। একটু পানি মিশিয়ে সেদ্ধ করা হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট অল্প আঁচে রান্না করার সময় অনবরত নাড়তে হয় যেন তলার না লেগে যায়।
রান্নার সময় চিনি বা লবণ দিয়ে না গলা পর্যন্ত জ্বাল দিতে হয়। শিশুর পরিপুরক এ খাদ্য থেকে ৩১০ ক্যালরী শক্তি পাওয়া যায়। দুধের পরিবর্তে ডিম দিয়েও এ খাদ্য তৈরি করা হয়।
সুইট কর্ন স্যুপ :
মাঝারি আকারের একটি কচি ভুট্টার মোচা, ১ চা চামচ চিনি, সাদা গোল মরিচের গুঁড়া, পরিমাণমতো টেস্টিং সল্ট, সয়া সস, কর্ন ফ্লাওয়ার বা এরারুট দিয়ে এই স্যুপ তৈরি করা যায়। ভুট্টার মোচা থেকে খোসা ও সুতা বা সিঙ্ক ছাড়িয়ে নিতে হয়।
আন্ত ভুট্টার মোচা পানি দিয়ে চুলায় বা প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করতে হয়। ভুট্টার দানা নরম হলে ঠাণ্ডা করে ছুরি দিয়ে আধা কাপ ভুট্টা ছাড়িয়ে নিয়ে বাকি আস্ত ভুট্টা কুরানি দিয়ে কুরে নিতে হয়। এবার পানিতে ভুট্টার দানা ও কুরানো ভুট্টা জ্বাল দিতে হয়।
চিত্র : এক বাটি কর্ন স্যুপ
তারপর লবণ, চিনি, গোলমরিচের গুঁড়া ও সয়াসস মিশাতে হয়। সবকিছু তিন মিনিট ফুটানোর পর এক টেবিল চামচ কর্ন ফ্লাওয়ার বা এরারুট মিশাতে হয়। স্যুপ অনবরত নাড়তে হয়। অল্প আঁচে জ্বাল দিয়ে ফুটে উঠলে নামিয়ে গরম অবস্থায় পরিবেশন করতে হয়। অনেকটা একই পদ্ধতিতে মিষ্টি ভুট্টা দানার সাথে মুরগির ডিম ও সিদ্ধ করা মুরগির মাংস দিয়ে চিকেন কর্ন স্যুপ তৈরি করা যায়।
আরও দেখুন :