ভিনেগার উৎপাদন

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ভিনেগার উৎপাদন ,যা জৈব প্রক্রিয়া প্রযুক্তি অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

ভিনেগার উৎপাদন

ভিনেগার উৎপাদন (ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে ইথাইল অ্যালকোহলকে বায়ু দ্বারা জারণ)

মূলনীতি ঃ লঘু ইথাইল অ্যালকোহলের ফারমেন্টেশন উৎপন্ন অ্যাসিটিক অ্যাসিডের লঘু (৬ – ১০%) পানির দ্রবণকে ভিনেগার (Vinegar) বলে। মাইকোডার্মা অ্যাসিটি (Mycoderma aceti) নামক ব্যাকটেরিয়ার (অর্থাৎ জীবাণুর) উপস্থিতিতে লঘু ইথাইল- অ্যালকোহলকে বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা জারিত করে ভিনেগার প্রস্তুত করা হয়

CH3CH2OH + O2 মাইকোডার্মা / অ্যাসিটি →CH3COOH+H2O

বর্ণনা ঃ ভিনেগার কুইক ভিনেগার পদ্ধতি (Quic vinegar process)-তে প্রস্তুত করা হয়। এ পদ্ধতিতে একটি বৃহদাকার কাঠের পিপার তলদেশে সছিদ্র তাক যুক্ত থাকে। তাকের উপর মাইকোডার্মা অ্যাসিটি ব্যাকটেরিয়াসমৃদ্ধ পুরাতন ভিনেগারে সিক্ত কাঠের (যেমন— Beech wood) ফালি বা চোকলা (Shavings) রাখা হয়।

 

ভিনেগার উৎপাদন

 

অতঃপর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির সহায়ক ফসফেট ও অজৈব লবণ মিশ্রিত ইথাইল অ্যালকোহল একটি লঘু পানির দ্রবণ (৬ – ১০%) সূক্ষ্ম ধারায় যোগ করা হয়। কাঠের পাতলা ফালি অ্যালকোহল ও বায়ুকে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নিবিড়ভাবে মিশবার সুযোগ দেয় ।

16 ভিনেগার উৎপাদন

 

অন্যদিকে বিক্রিয়ায় তাপে পিপার নিম্নদেশ হতে বায়ু উপরের দিকে উঠতে থাকে। ফলে বায়ুর অক্সিজেন ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে অ্যালকোহলকে জারিত করে অ্যাসিটিক অ্যাসিডে পরিণত করে। বিক্রিয়াটি তাপ-উৎপাদী; অ্যালকোহলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত করে তাপমাত্রা ৩৫°সে. এ রাখা হয়। ব্যাকটেরিয়ার স্বাভাবিক ক্রিয়া ও বৃদ্ধির পক্ষে এ তাপমাত্রা অনুকূল।

 

ভিনেগার উৎপাদন

 

উৎপন্ন অ্যাসিটিক অ্যাসিড অপরিবর্তিত অ্যালকোহলসহ পিপার তলদেশে জমা হয়। উহাকে পাম্পের সাহায্যে বাহির করে এনে কয়েকবার চোকলা স্তূপের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত করলে সম্পূর্ণ ইথাইল-অ্যালকোহলের জারণে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের (৬ – ১০%) লঘু দ্রবণ পাওয়া যায়।

বায়ুর গতি নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক কারণ বায়ু কম হলে CH3CHO এবং বেশি হলে CO2 ও পানি পাওয়া যায়। এরূপে উৎপন্ন লঘু অ্যাসিটিক অ্যাসিড দ্রবণের সাথে বিভিন্ন ধরনের রং ও সুগন্ধি দ্রব্য মিশিয়ে ভিনেগার নামে বাজারে বিক্রয় করা হয়।

 

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment