আজকের আলোচনার বিষয়ঃ ভিটামিন বি৬ কমপ্লেক্স বা পিরিডক্সিন। যা খাদ্য রসায়নের মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের অর্ন্তভুক্ত।
Table of Contents
ভিটামিন বি৬ কমপ্লেক্স বা পিরিডক্সিন । Vitamin B6 complex or Pyridoxine
ভিটামিন বি৬ একটি এন্টিডারমাটাইটিস (Antidermatitis) ফ্যাক্টর। কেননা এর অভাবে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী চর্মরোগ বা ডারমাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়। ভিটামিন B6 তিনটি যৌগের সমন্বয়ে গঠিত। এগুলো হলো পিরিডক্সিন (Pyridoxine), পিরিডরাল (Pyridoxal) ও পিরিডক্সামিন(Pyridoxamine) এ তিনটি যৌগকে একত্রে ভিটামিন B6 কমপ্লেক্স বা ভিটামিন B গ্রুপ বলে।
(ক) ভিটামিন বি৬ এর রাসায়নিক গঠনঃ
ভিটামিন-Bg এর তিনটি গঠনই পিরিডিনের জাতক। এদের প্রত্যেকের রাসায়নিক গঠনের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই শুধুমাত্র পিরিডিনের 4নং কার্বনে বিভিন্ন প্রতিস্থাপক যুক্ত থাকে। যেমন
(খ) ভিটামিন বি৬এর উৎস :
ভিটামিন B6 পানিতে দ্রবণীয় অপরিহার্য খাদ্য উপাদান। উদ্ভিদ ও প্রাণিজ
উভয় খাদ্য উপকরণে এর উপস্থিতি রয়েছে। যেমনঃ চালের কুঁড়া, অঙ্কুরিত বীজ, দানাশস্য প্রভৃতি এর প্রধান উদ্ভিজ্জ উৎস। আবার প্রাণীর যকৃৎ, ডিমের কুসুম ইত্যাদি এর সর্বোৎকৃষ্ট উৎস।
(গ) ধর্মাবলী :
১। জৈবিকভাবে পিরিডক্সালকে পিরিডক্সিনে এবং পিরিডক্সিনকে পিরিডক্সামিনে রূপান্তর করা যায়।
২। এটি ক্ষারজাতীয় বর্ণহীন পদার্থ, যা পানি ও অ্যালকোহলে দ্রবণীয় ।
৩। পিরিডক্সিন এর গলনাংক 160°সে এবং এটি অতিবেগুনী রশ্মি ও আলোতে সুগ্রাহী।
৪। পিরিডক্সিনকে এসিড ও ক্ষার দ্রবণে তাপ দিলে তা স্থিতিশীল থাকে। কিন্তু পিরিডক্সাল ও পিরিডক্সামিনকে উচ্চ তাপ দিলে তা ভেঙ্গে যায়।
(ঘ) জৈবিক কাজ
১। দেহে ভিটামিন B6 এর প্রধান কাজ হলো এটি এমাইনো এসিড ভাঙ্গা ও অ্যামাইনো এসিডের সংশ্লেষণ। আবার কোষ ঝিল্লির মধ্য দিয়ে এমাইনো এসিড এবং বিভিন্ন ধাতব আয়ন চলাচলের জন্য দেহে ভিটামিন B, একান্ত প্রয়োজন।
২। হিমোগ্লোবিনের হিম তৈরিতে এর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। আবার এটি বিভিন্ন এনজাইমের অংশ হিসেবে কাজ করে।
৩। দেহে এন্টিবডি প্রস্তুতে ভিটামিন B, বিশেষ ভূমিকা পালন করে এবং এটি স্নায়ুকোষের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(ঙ) ভিটামিন বি৬ এর অভাবজনিত রোগ:
১। দেহে স্বাভাবিক পুষ্টিবিধানের জন্য প্রায় সকল প্রাণীদেহে ভিটামিন B, অত্যাবশ্যক। ভিটামিন B6 এর অভাবে ইঁদুর ও মানুষসহ সকল প্রাণিতে এক্রোডাইনিয়া নামক এক বিশেষ ধরনের চর্মরোগ বা ডারমিটেটিস (Derretitis) হয়।
এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, এ ধরনের চর্মরোগের ফলে ইঁদুরের ত্বক, লেজ, পা এবং কান ও মুখে ফোসকা পড়ে। ভিটামিন-B, এর অভাবজনিত কারণে মানুষসহ সকল প্রাণীতে এ বিশেষ ধরনের চর্মরোগের লক্ষণ দেখা দেয় বলে একে এন্টিভারমোটেটিক ফ্যাক্টর (antidermotitic factor) বলে।
২। এর অভাবে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেমনঃ শিশুর স্নায়ুবিক পক্ষাঘাত রোগ।
৩। এ ভিটামিনের অভাবে দেহে রক্ত কণিকা হ্রাস পায়।
৪। ভিটামিন B6 এর অভাবে ধীরে ধীরে শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়।
৫। ভিটামিন B6 এর অভাবে হাইপোক্রোনিক এনিমিয়া রোগ হয়।
৬। ভিটামিন B6 এর অভাবে বমি বমি ভাব ও খাওয়ায় অরুচি দেখা দেয়
আরও দেখুনঃ