আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় বিভিন্ন প্রকার ডালের জাত
Table of Contents
বিভিন্ন প্রকার ডালের জাত
ভূমিকা
ডাল লিগিউম জাতীয় রবি মৌসুমের ফসল। এটি লিগুমিনেসি পরিবারের পেপিলেওনেসি উপ- পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এই পরিবারের যে সমস্ত ফসলের পরিপক্ব ও শুকনো বীজ আহারোপযাগী সেগুলোকেই ডাল বা Pulse বলে।
অবশ্য এদের কোন কোন উদ্ভিদের কাঁচা শুঁটি বা বীজ তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। মসুর, মুগ, মাষকলাই, ছোলা, খেসারি, মটরশুঁটি, অড়হর ফেলন সিম প্রভৃতি শুঁটি জাতীয় দানা যা মানুষের খাদ্যরূপে ব্যবহৃত হয়, তাই ডালশস্য বা Pulse Crop । সাধারণত খোসা ছাড়ানোর পর যুক্ত বা বিযুক্ত বীজপত্রগুলোকে ডাল বলে।
লিগুমিনেসি পরিবারের বৈশিষ্ট্য
এ পরিবারের ফসলের বৈশিষ্ট্য হলো, এদের শিকড়ের গুটিতে বসবাসরত ব্যাক্টেরিয়া বাতাস থেকে নাইট্রোজেন আবদ্ধ (Fixation) করে জমি উর্বর করে। ফলে এ ফসলে নাইট্রোজেন সার কম দিলেই চলে।
আবাদ মৌসুম ও গুরুত্ব
শীতের শুরুতে ডাল চাষ শুরু হয়ে বৈশাখে ডাল ফসল কৃষকের ঘরে ওঠে। অন্যান্য ফসল অপেক্ষা ডালে বেশি আমিষ থাকে। ডালের আমিষ মানবদেহ সহজে গ্রহণ করতে পারে। যারা মাছ-মাংস ক্রয় করে খেতে পারে না তারা স্বল্পমূল্যে ডাল খেয়ে আমিষের অভাব পূরণ করে। এ কারণে ডালকে গরিবের মাংস বা Poor man’s meat বলে।
আমিষ ছাড়াও ডালে স্নেহ, খনিজদ্রব্য, আঁশ ও খাদ্যপ্ৰাণ পাওয়া যায়। প্রাণিখাদ্য হিসেবে ডালের সবুজ ও কাঁচা গাছ, ডাল ও ডালের খোসা এবং ভুসি যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহার হয়। ডালের মধ্যে মসুর, মুগ, বুট ও ছোলার ডালের জনপ্রিয়তা বেশি। মুগ ডালের ফলন কম হয় বলে বাজারে মূল্য বেশি থাকে। রান্নার পর সুগন্ধ ও স্বাদের জন্য মুগ ডাল শীর্ষস্থানীয়।
বাংলাদেশে ডাল উৎপাদন খুবই সম্ভাবনাময়। বিগত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৯ লক্ষ ২০ হাজার একর জমিতে মোট ডাল ফসলের উৎপাদন হয় ৩ লক্ষ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন। ডালের ফলনে আমাদের দেশের মোট চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। পুষ্টিবিদগনের মতে একজন মানুষের দৈনিক ডালের চাহিদা ৪৫ গ্রাম।
সে হিসাব মতে আমাদের প্রতি বছর ২০০ কোটি টাকার ডাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় ডালের ব্যবহারে নিম্নের তিনটি কাজ সম্পন্ন হয়। যেমন-
(১) দানা জাতীয় শস্য এবং ডালের মিশ্রিত খাদ্য শিশুর দেহবৃদ্ধি এবং বয়স্কদের শরীর রক্ষণাবেক্ষণ করে।
(২) ডাল ভিটামিন বি (রিবোফ্লাভিন ব্যতীত)-এর উৎকৃষ্ট উৎস। এতে যথেষ্ট পরিমাণ থায়ামিন বা ভিটামিন-বি১ আছে যা বেরিবেরি রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
(৩) ডাল ও দানা জতীয় শস্যে ভিটামিন-সি এর অভাব আছে, কিন্তু অঙ্কুরিত ডালের দানায় যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে। যেমন- ছোলা ও মুগের অঙ্কুর।
বিভিন্ন প্রকার ডালের জাত
বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI) ( জয়দেবপুর, গাজীপুরে)- এর ডাল গবেষণা কেন্দ্র থেকে অবমুক্ত বিভিন্ন প্রকার ডাল জাতের নাম, উৎপাদনের মৌসুম, হেক্টরপ্রতি ফলন, জীবনকাল ও গাছের বৈশিষ্ট্য নিম্নের ছকে দেয়া হলো :
আরও দেখুন :