আজকের আলোচনার বিষয়ঃ চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ডি । যা খাদ্য রসায়নের মৌলিক ধারণা অধ্যায়ের অর্ন্তভুক্ত।
Table of Contents
চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ডি । Fat soluble Vitamin D
ভিটামিন ডি স্টেরয়েড জাতীয় যৌগ। এ পর্যন্ত পাঁচটি ফর্মে ভিটামিন D পাওয়া গেছে। যেমনঃ ভিটামিন- D1 ভিটামিন- D2 (এরগোক্যালসিফেরল, Ergocalciferol), ভিটামিন-D3 (কোলেক্যালসিফেরল, Cholecalciferol) D4 ও D5 এরা সকলেই স্ফটিকধর্মী। ভিটামিন ডি এর এ পাঁচটির মধ্যে ভিটামিন-D2 ও ভিটামিন-D3 অন্যতম।
(ক) ভিটামিন ডি এর রাসায়নিক গঠন:
ভিটামিন D2 (এরগোক্যালসিফেরল, Ergocalciferol) ও ভিটামিন- D3 (কোলেক্যালসিফেরল, Cholecalciferol) এর রাসায়নিক গঠন কাঠামো নিম্নরূপ
(খ) উৎস :
১। যে সকল পশু-পাখি সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে আসে তাদের দুধ ও ডিমে (বিশেষ করে ডিমের কুসুম ) প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন D পাওয়া যায়। এ ছাড়াও প্রাণীর যকৃত ও মাছের তেলে ভিটামিন D পাওয়া যায়।
২। সূর্যরশ্মির ভিটামিন D এর একটি বিশেষ প্রাকৃতিক উৎস। আমরা জানি, ত্বকের উপরিভাগে ও নিম্নভাগে 7-ডিহাইড্রোকোলেস্টেরল থাকে। এ 7 ডিহাইড্রোকোলেস্টেরল সূর্যরশ্মির সাহায্যে ভিটামিন D তৈরি করে।
৩। এ ছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে কর্ড, শার্ক ও হ্যালিবেট মাছের তৈল ভিটামিন D এর উৎস হিসেবে কাজ করে।
(গ) ধর্মাবলী
১। ভিটামিন ডি একটি স্টেরল শ্রেণিভুক্ত জৈব পদার্থ।
২। এটি এক প্রকার সাদা বর্ণের স্ফটিকীয় পদার্থ।
৩। ভিটামিন ডি এটি জৈব দ্রাবক এবং চর্বিতে দ্রবণীয় ।
৪। ভিটামিন-D2 তাপ ও বাতাসে স্থিতিশীল এবং ভিটামিন D এর গলনাংক 115-118 সে.
৫। ভিটামিন D খুবই সত্রিনা প্রকৃতির হয়ে থাকে এবং বায়ু ও আলোর সংস্পর্শে এটি সক্রিয়তা হারায়।
(ঘ) জৈবিক কাজ
১। ভিটামিন ডি এর অত্যাবশ্যক কাজ হল অস্ত্র থেকে খাদ্যের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস ঘটিত লবণ ভালোভাবে শোষণে সহায়তা করা।
২। রক্ত প্রবাহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এর যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
৩। দেহের অস্থি গঠন ও বৃদ্ধি এবং দাঁত উঠতে সাহায্য করে।
৪। দাঁতের সার্বিক গঠন সুষ্ঠু রাখতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
৫। শিশুদের রিকেটস্ রোগ ও বয়স্কদের অস্টিওম্যালেসিয়া রোগ প্রতিরোধ করে।
৬। ভিটামিন ডি হাড়ের ও রক্তের ক্যালসিয়াম আয়নের (Ca) সমতা সাধন করতে সাহায্য করে।
(ঙ) ভিটামিন D এর অভাবজনিত রোগ
ভিটামিন D এর অভাবজনিত রোগসমূহের মধ্যে রয়েছে–
১। রিকেট (Rickets):
ভিটামিন D এর অভাবে শিশুদের রিকেট হয়ে থাকে। শিশুর দেহ বর্ধনের সম তার হাড়গুলোও সুষমভাবে বাড়তে থাকে। মূলতঃ ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস অস্থিতে থিতিয়ে জমে হাড়কে শত রাখে এবং বর্ধনে সহায়তা করে। ভিটামিন D ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসকে রক্ত থেকে অস্থিতে জমা করে। ফলে অস্থি শক্ত হয়। ভিটামিন D এর অভাবে রক্তে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ঠিক মত হয় না । যা কারণে অস্থিতে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থিতিয়ে জমতে পারে না। ফলে অস্থি দুর্বল হয়ে যায় এবং দৈহিক বৃদ্ধি মন্থর হয় (যেমনঃ হাতের কব্জি, পায়ের গোড়ালি ও হাঁটু বেশ মোটা হয়)।
২। অস্টিওম্যালেসিয়া (Osteomalacia):
ভিটামিন D এর অভাবে প্রাপ্ত বয়স্কদের এ রোগ হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্কদের ভিটামিন ডি এর অভাব পরিলক্ষিত হয়না, তবে বিশেষতঃ প্রসূতি, গর্ভবর্তী এবং বৃ ব্যক্তিদের যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন D এর অভাব দেখা দেয়। এ রোগে অস্থি দুর্বল হয়ে কাঠিন্য কমে যায় ত অস্থি নরম হয়ে যায় এবং হাঁটু ব্যথা হয়ে যায়।
আরও দেখুনঃ