আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ফসফরাসের প্রাণরাসায়নিক কাজ , যা খনিজ পদার্থ অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
ফসফরাসের প্রাণরাসায়নিক কাজ
ফসফরাসের প্রধান উদ্ভিজ্জ উৎস হলো দানাশস্য, আটা, সবজি ও ফল এবং প্রধান প্রাণিজ উৎস হলো ডিম, দুধ, মাছ ও মাংস। আমাদের দেহে 400-700 gm ফসফরাস ফসফেট হিসেবে সঞ্চিত থাকে।
এটি আমাদের দেহ হাড়, দাঁত এবং জৈবযৌগে সংযুক্ত থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের 0.8 gm, শিশুদের 0.5 gm গর্ভবতী মহিলাদের । gm প্রতিদিন ফসফরাস প্রয়োজন।
১। হাড় ও দাঁত গঠনে এটি অপরিহার্য উপাদান।
2। ATP ও ক্রিয়েটিন ফসফেট ইত্যাদি যৌগ গঠনে ও পেশি সংকোচনে অংশ নেয়। ৩। কোষের নিউক্লিওপ্রোটিন ও ফসফোলিপিডের উপাদান হিসাবে জৈবিক কাজে সহায়তা করে।
৪। লিপিডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তার শোষণ, পরিবহন ও বিপাকীয় কাজে অংশগ্রহণ করে। ৫। ফসফোলিপিড গঠন করে রক্ততঞ্চনে অংশ নেয়।
৬। সহ-উৎসেচকের উপাদান হিসাবে বিপাকে অংশ নেয়। ৭। দেহকোষে জৈব রাসায়নিক ক্রিয়ায় হাইড্রোজেন বাফারের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করে।
৮। ফসফরাস সংযুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র থেকে কার্বোহাইড্রেট শোষণ, বৃক্ক থেকে পুনঃশোষণ, গ্লাইকোজেন ও গ্লুকোজের বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে।
৯। ডিম ও দুধে যথাক্রমে ওভোভিটেলিন ও কেসিন নামক ফসফো প্রোটিনের অণুতে ফসফরাস বর্তমান। সেজন্য ডিম ও দুধের উৎপাদনের জন্য এটি অপরিহার্য।
১০। জীবের গঠন ও প্রোটিন সংশ্লেষণে ফসফরাস অপরিহার্য। কারণ ফসফরাস DNA এবং RNA উভয় প্রকার নিউক্লিক অ্যাসিড অণুরই এক অপরিহার্য উপাদান।
১১। রক্ত ও অন্যান্য কলায় সোডিয়াম অথবা পটাশিয়াম ঘটিত ক্ষারধর্মী মোনোহাইড্রোজেন ফসফেট ও অম্লধর্মী ডাইহাইড্রোজেন ফসফেট মিশ্রিত অবস্থায় বাফার রূপে কাজ করে এবং যথাক্রমে অম্ল ও ক্ষারের আধিক্য নির্ধারণ করে হাইড্রোজেন আয়নের গাঢ়তাকে অক্ষুণ্ণ রাখে।
১২। দেহে বহু বিক্রিয়ায় উচ্চশক্তি ফসফেট এবং নিম্নশক্তি ফসফেট উভয় প্রকার যৌগের সাহায্যেই বিভিন্ন বস্তুর অণুতে ফসফেট গ্রুপযুক্ত হয়ে বিক্রিয়া ও বিপাকে সাহায্য করে। একে ফসফোরিলেশন (Phosphorylation) বলে।
১৩। NAD, NADP, পাইরিডক্সান ফসফেট, থায়ামিন পাইরোফসফেট, Co-A FMN, FADN প্রভৃতি বহু ভিটামিন-ঘটিত কোএনজাইমের অণুতে ফসফেট গ্রুপ বিদ্যমান।
আরও পড়ূনঃ