Site icon Food & Culinary Arts Gurukul [ খাদ্য ও রন্ধনশিল্প গুরুকুল ] GOLN

প্ল্যান্ট লোকেশন অ্যান্ড সাইট সিলেকশন । ফুড প্রসেস প্ল্যান্ট লে-আউট অ্যান্ড ডিজাইন

প্ল্যান্ট লোকেশন অ্যান্ড সাইট সিলেকশন

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় প্ল্যান্ট লোকেশন অ্যান্ড সাইট সিলেকশন। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ হলো কৃষি পণ্যকে খাদ্যে রূপান্তরিত করা বা এক ধরনের খাদ্যকে অন্য আকারে রূপান্তর করা। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ অনেক রূপ নেয়, কাঁচা ময়দায় শস্য পিষে, বাড়িতে রান্না করা, এবং সুবিধাজনক খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত জটিল শিল্প পদ্ধতি।

কিছু খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি খাদ্যের অপচয় কমাতে এবং খাদ্য সংরক্ষণের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এইভাবে কৃষির মোট পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস করে এবং খাদ্য নিরাপত্তা উন্নত করে।নোভা শ্রেণিবিন্যাস বিভিন্ন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কৌশল অনুসারে খাদ্যকে গোষ্ঠীভুক্ত করে।

 

 

প্ল্যান্ট লোকেশন অ্যান্ড সাইট সিলেকশন

(Plant Location & Site Selection)

১.১ শিল্পকারখানা স্থাপন এবং উপযুক্ত স্থান নির্বাচন (Plant location and site selection) :

শিল্পকারখানা স্থাপনের প্রথম ও প্রধান ধাপ হচ্ছে ঐ শিল্পকারখানার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা। শিল্পকারখানার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করতে হয়, যেমন- স্থান, কাঁচামাল, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শ্রমিক, জ্বালানি, পানি ইত্যাদি।

১.২ শিল্পকারখানা স্থাপনে বিবেচ্য বিষয়াদি (Factors of plant location) :

কোনো এলাকায় শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হয়।

১। প্রয়োজনীয় কাঁচামালের প্রাপ্যতা

২। বাজারজাতকরণের সুযোগ-সুবিধা

৩। জ্বালানি যেমন গ্যাস, বিদ্যুৎ, কয়লা ইত্যাদি

৪। যোগাযোগ ব্যবস্থা

৫। আবহাওয়া ও জলবায়ু

৬।প্রয়োজনীয় জনশক্তি ও শ্রমিকদের মজুরি

৭। আইনি বাধ্যবাধকতা ও কর

৮। নাগরিক সুবিধা যেমন চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান ইত্যাদি

৯।পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

১০। বাল্পসংস্থান ও দূষণ

১১। মূলধনের পরিমাণ

১২। উক্ত স্থানের বৈশিষ্ট্য এবং নিরাপত্তা

১৩। ভূমি মূল্য

১৪। শিল্পসংশ্লিষ্ট আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা, শিল্প পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি।

১.৩ গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের প্ল্যান্ট সাইটের পার্থক্য (Differences between rural & urban plant sites) :

নিম্নে গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের শিল্পস্থানের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হলোঃ

রুরাল বা গ্রামাঞ্চলের প্ল্যান্ট সাইট
আরবান বা শহরাঞ্চলের প্ল্যান্ট সাইট
১। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বৃহৎ শিল্পকারখানা স্থাপন বা সম্প্রসারণ সহজ।
১। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বৃহৎ শিল্পকারখানা স্থাপন বা সম্প্রসারণ অপেক্ষাকৃত কঠিন।
২। বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা পর্যাপ্ত।
২। বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা পর্যাপ্ত নয়।
৩। শ্রমিকদের মজুরি অপেক্ষাকৃত কম।
৩। শ্রমিকদের মজুরি বেশি।
৪। দূষণ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় খরচ কম।
৪। দূষণ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় খরচ বেশি।
৫। ভূমির খাজনা শহরের তুলনায় কম।
৫। ভূমির খাজনা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি।
৬। বিপজ্জনক উৎপাদন প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট শিল্প স্থাপন করা যায়।
৬। বিপজ্জনক উৎপাদন প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট শিল্প স্থাপন করা যায় না।
৭। যোগাযোগ ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত দুর্বল।
৭। উত্তম যোগাযোগ ব্যবস্থা।
৮। ব্যাংকিং ব্যবস্থা সহজলভ্য নয়।
৮। ব্যাংকিং ব্যবস্থা সহজলভ্য।
৯। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য নয়।
৯। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য।

 

 

 

১.৪ শিল্প স্থাপনে শহুরে স্থান, উপশহুরে স্থান এবং গ্রামীণ স্থান বাছাইয়ের প্রয়োজনীয়তা বা সুযোগ-সুবিধা
Requirements governing cholce of a city location, suburban location and rural location) :

শিল্প স্থাপনে শহুরে স্থান বাছাইয়ের সুযোগ-সুবিধা (Requirements governing cholce of a city location) :

শহরাঞ্চলে প্ল্যান্ট স্থাপনের সুযোগ-সুবিধা হলো:

১। পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্রমিক-কর্মচারীর প্রাপ্যতা

২। উচ্চ আনুপাতিক হারে দক্ষ জনশক্তির প্রাপ্যতা

৩। ভোক্তা ও সরবরাহকারীর মধ্যে সহজ ও দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা

৪। বহুতলীয় স্থাপনা বা বৃহৎ শিল্প স্থাপনা

৫। পানি পয়ঃ/ড্রেনেজ/সিউরেজ ও জ্বালানি যেমন- বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইত্যাদির সহজপ্রাপ্যতা

৬। উত্তম যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন টেলি-ডাক ইত্যাদি

৭। ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার সহজলভ্যতা

৮। উত্তম স্বাস্থ্যসেবা।

স্থাপনে উপশহরে স্থান বাছাইয়ের সুযোগ-সুবিধা (Requirements governing the choice of a suburban location) :

উপশহরে প্ল্যান্ট স্থাপনের সুযোগ-সুবিধাগুলো হলোঃ

১। সহজ যোগাযোগ ও জনবসতিপূর্ণ জায়গার কাছাকাছি বৃহৎ শিল্প স্থাপনের সুযোগ

২। বিভিন্ন প্রকার বাধ্যবাধকতামুক্ত যেমন স্বল্পমূল্যের জায়গাপ্রাপ্তি, আনুষঙ্গিক সুবিধাদি

৩। গাড়ি পার্কিং ও অন্যান্য শুল্ক থেকে মুক্ত

৪। শিল্পের কাছাকাছি শ্রমিক-কর্মচারীদের বসবাস

৫। ঘনবসতিপূর্ণ নয়, কিন্তু সম্প্রদায়ের কাছাকাছি অর্থাৎ ঘনবসতিপূর্ণ নয় কিন্তু জনবহুল

৬। শহরের তুলনায় উপশহরে শিল্প সম্প্রসারণ সহজ।

শিল্প স্থাপনে গ্রামীণ স্থান বাছাইয়ের সুযোগ-সুবিধা (Requirements governing the choice of a rural location) :

গ্রামাঞ্চলে শিল্প স্থাপনের সুযোগ-সুবিধা নিম্নরূপঃ

১। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বৃহৎ শিল্প স্থাপন বা সম্প্রসারণ সহজতর

২। বিপজ্জনক উৎপাদন প্রক্রিয়া যেমন- রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা যায়

৩। দূষণ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় খরচ অপেক্ষাকৃত কম

৪। বিশুদ্ধ পানির পর্যাপ্ততা

৫। ভূমির খাজনা শহরাঞ্চলের তুলনায় কম

৬। প্রক্রিয়াজাতকরণের গোপনীয়তা রক্ষা করা সহজ

৭। অনুন্নত ও উন্নত জায়গার মধ্যে সমতা আনয়ন

৮। অদক্ষ জনশক্তি কাজে লাগানোর সুযোগ

৯। শ্রমিকদের মজুরি অপেক্ষাকৃত কম।

১.৫ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনে নকশা প্রণয়ন (Design consideration for location of a food processing plant) :

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনে নকশা প্রণয়নের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়াবলি বিবেচ্য:

১। জায়গার অবস্থান নির্ধারণে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া।

২। যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ।

৩। বিভিন্ন নিয়ামকের উৎপাত ও দূষণ প্রতিরোধ।

৪। পর্যাপ্ত শক্তি উৎপাদনে ছাদের নকশা প্রণয়ন।

৫। দেয়াল ও ফিনিশ দ্রব্যের দ্বারা সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ।

৬। দেয়াল ও ছাদের মজবুত সামগ্রী সংস্থাপন।

৭। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় উপযুক্ত ডিজাইন প্রণয়ন।

৮। পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে উপযোগিতা মূল্য নিম্নপর্যায়ে রাখা।

৯। উন্নত নকশাসম্বলিত এবং পরিষ্কারকরণযোগ্য প্রক্রিয়াকরণ সরঞ্জামাদি বাছাইকরণ।

১০। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অনুশীলনে কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান।

 

 

১.৬ স্থান নির্বাচনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics for site selection):

ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ:

১। সন্তোষজনকভাবে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের প্রাপ্যতা, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।

২। কাঁচামালের পর্যাপ্ত সরবরাহ।

৩। বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের সুযোগ-সুবিধার উপস্থিতি।

৪। ইঁদুর, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে যে-সব কারণ তাদের অনুপস্থিতি।

৫। কারখানা বর্ধিত করতে ও সুন্দর করতে যথেষ্ট পরিমাণ বাড়তি জায়গার উপস্থিতি।

৬। প্রকৃতি ও জলবায়ুর অনুকূল অবস্থা।

৭। কাঁচামাল আমদানি ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে ন্যূনতম পরিবহণ খরচ।

৮। যোগ্য ব্যবস্থাপকের পর্যাপ্ততা।

৯। প্রয়োজনীয় দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের সহজলভ্যতা।

১০। কাছাকাছি ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য অর্থনৈতিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি।

১১। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা-ও চিকিৎসা সেবা।

১.৭ শিল্প স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচনের ফ্যাক্টর বা নিয়ামক (Factors for site selection) :

১। কাঁচামালের প্রাপ্যতা

২। বাজার সুবিধা

৩। অবকাঠামোগত সুবিধা

৪। সরকারি নীতি

৫। জনশক্তির প্রাপ্যতা

৬। স্থানীয় রীতিনীতি

৭। বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশগত অবস্থা

৮। আবহাওয়া ও জলবায়ু

৯। রাজনৈতিক অবস্থা

১০। ভূমির মূল্য

১১। পরিবহণ সুবিধা

১২। অবস্থান

১৩। পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদির সহজলভ্যতা।

আরও দেখুন : 

Exit mobile version