Site icon Food & Culinary Arts Gurukul [ খাদ্য ও রন্ধনশিল্প গুরুকুল ] GOLN

দুপুরে কি খাবেন?

দুপুরে কি খাবেন?

দুপুরে কি খাবেন? – যারা অফিসে কাজ করেন, তাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সুস্থ দেহ ও মনের জন্য সঠিক খাদ্য একটি অপরিহার্য শর্ত। আপনার শরীর, বয়সের বিবেচনায় সঠিক খাদ্য প্রতিজন মানুষকে কর্মক্ষম ও সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন। শহুরে জীবনে মানুষের খাবার অভ্যাস বেড়েছে। আমরা তিন বেলা খাবারের ফাঁকে ফাঁকেও প্রতিদিনই নাস্তা বা স্ন্যাকস আইটেমগুলো খেয়ে থাকি। সুস্থ থাকার জন্য সময়মত হিসাব করে খাওয়া আরও বেশি জরুরি। পরিমাণে একেবারে অল্পও নয়, আবার বেশিও নয়, আহার হবে পরিমিত।

 

 

দুপুরে কি খাবেন?

আমাদের মধ্যে সকাল ও রাতের খাবার নিয়ে সচেতনতা কাজ করলেও, দেখা যায় দুপুরের খাবার নিয়ে অনেকাংশে উদাসীনতা। ফলে, দুপুরের খাবারটি বেশিরভাগ সময় পুষ্টিমানের বিচারে পিছিয়ে থাকে। কাজের চাপ, গরম আবহাওয়া ইত্যাদি কারণেঅনেকেই নাকে মুখে পেটে চালান করেন যে কোনো খাবার। দুপুরের আগে কোনো সুখবর পেলে কেউগলা ডুবিয়ে খান আবার কেউ হয়ত কোনো কারণে মন খারাপ থাকায় খালি পেটেই কাটিয়ে দেন।

আবার অনেকেই সকালে না খেয়ে দুপুরে একবারে বেশি পরিমাণ খাবার খান, যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ একজনের জন্য কেমন হওয়া উচিত দুপুরের খাবার চলুন জেনে নেয়া যাক।

 

 

যে বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরী:

পুষ্টিকর খাবার যেমন শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, তেমনি অতিরিক্ত খাবার-ও শরীরের ক্ষতি করে। সুতরাং খাবার নির্বাচনে সতর্ক হতে হবে। ফলে কিছু বিষয় জানতে ও মানতে হবে। যেমন:

নিজের খাবার প্রস্তুতি:

কর্মজীবীদের মধ্যে একটি প্রবণতা দেখা যায় দুপুরের খাবারটি অফিসের ক্যান্টিনে করবার। প্রতিদিন বাইরে খাওয়ার পেছনে অতি প্রচলিত অজুহাত সকালে খাবার তৈরির সময় হয় না। তবে আপনি যদি একটু সময় বের করে আগের রাতের একটু রান্না করে রাখতে পারেন তবে তা হতে পারে পরেরদিনের মজাদার দুপুরের খাবার। বাড়ি থেকে আনা খাবারের দুটি বড় ধরনের সুবিধা হল এতে খরচ কমে এবং আপনি জানেন খাবারটা কতটুকু নিরাপদ।

কাজের টেবিলে খাবেন না:

লক্ষ্য রাখতে হবে খাওয়ার জায়গা আর কাজের জায়গা যেন এক না হয়। দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে যেখানে বসে কাজ করছে সেখানে বসেই খেলে, খাবারের চেয়ে কাজে মন বেশি থাকে। দুপুরের খাবারটি হওয়া উচিৎ মনোযোগ সহকারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নইলে একই জায়গায় খাবার খেলে ও কাজ করলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।

 

কাজের টেবিলে খাবেন না

 

কার্বোহাইড্রেট একেবারে বাদ না দেয়াই ভালো:

দুপুরের খাবারে অনেকে কার্বোহাইড্রেটযুক্ত পরিহার করতে চান। দেখা যায় এ ধরণের খাবার খেলে আসলে শরীরে আলস্য দেখা দেয়। ফলে দুপুরের খাবারে কার্বোহাইড্রেট অনেকেই বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু, সারাদিনে মস্তিষ্ক সচল এবং শরীরের কর্মোদ্যোম ধরে রাখতে চাইলে দুপুরের খাবারে কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন। কার্বোহাইড্রেট একেবারেই পরিহার করলে মাথা ঝিমঝিম আর শরীরে ম্যাজম্যাজে-ভাব আসতে পারে। ফলে পরিমিত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার হতে পারে দুপুরের জন্য আদর্শ।

 

 

দুপুরে খাবার সময়:

দুপুরে খাওয়ার সঠিক সময়টি নিয়ে অনেকেই আসলে অবগত নন। সময়টি হওয়া উচিত সাড়ে ১২টা থেকে ১টা। সকাল ও দুপুরের খাবারের মধ্যে একটা হালকা নাশতা নিতে করে নেয়া ভালো। সকালের নাশতা যদি পেট ভরে খাওয়া হয়, দুপুরের খাবারটা মাঝারি পরিমাণের হওয়া উচিত।

দুপুরের খাবারের মেন্যু:

দুপুরের খাবার হিসেবে রাইস সালাদ একটি আদর্শ খাবার হতে পারে। এক্ষেত্রে সালাদের মধ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদানগুলো যুক্ত করে নিতে হবে। সেই বিচারে ব্রাউন রাইস অন্যতম পছন্দ।

ব্রাউন রাইস অ্যান্ড ব্রকলি সালাদ উইথ ফ্রাইড স্রিম্প

রাইস সালাদ রেসিপিটি তৈরী করতে পারেন নানান উপায়ে। কেননা, পুষ্টিকর বিভিন্ন রাইস সালাদ রেসিপি রয়েছে। আমরা জানবো ব্রাউন রাইস অ্যান্ড ব্রকলি সালাদ উইথ ফ্রাইড স্রিম্প।

প্রয়োজনীয় উপাদান:

 

 

প্রস্তুত প্রণালী:

প্রথম ধাপ:

প্যাকেটের নির্দেশাবলী অনুসরণ করে চাল রান্না করুন, রান্নার শেষ হবার ৩ মিনিট আগে মটরশুঁটি দিন। ভাল করে পানি ছেঁকে নিন।

২য় ধাপ:

অন্যদিকে ব্রোকলিগুলো ৪-৫ মিনিট নরম হবার আগ পর্যন্ত সেদ্ধ করুন। এরপর একে খুব ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন কিছু সময়। তারপর ভালোভাবে পানি ঝড়িয়ে নিন। একটি ছোট বাটিতে মিশো, আদা, ভিনেগার, মধু, তিলের তেল এবং সিজনিং মশলা মিশিয়ে নিন।

৩য় ধাপ:

নন-স্টিক ফ্রাই প্যানে ভেজিটেবল তেল গরম করুন। প্রথমেই রসুন এবং অর্ধেক পরিমাণ মরিচ দিন এবং কয়েক মিনিটের জন্য ধীরে ধীরে বাদামি না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। চিংড়িতে দিয়ে দিন, সাথে ব্ল্যাক পিপার ও এক চিমটি লবণ দিন। চুলার উত্তাপ বাড়িয়ে দিন। চিংড়িগুলি রান্না না হওয়া পর্যন্ত কয়েক মিনিট ধরে রান্না করুন।

এবার রান্না করা ভাতের সাথে মিসো ড্রেসিং সস সিপ্রং অনিয়ন, ধনিয়া এবং ব্রোকলি যোগ করুন। সব একসাথে ভালো করে মেশান।। চাইলে আপনি স্পাইসি করতে উপরে পিপার দিতে পারেন।

ব্যস! হয়ে গেল স্বাস্থ্যকর ব্রাউন রাইস অ্যান্ড ব্রকলি সালাদ উইথ ফ্রাইড স্রিম্প।

 

 

এছাড়া অন্যান্য জরুরী বিষয়:

সামান্য বিশ্রাম:

সাধারণত দেখা যায়, দুপুরের দুপুরের খাবারের সময়টি পয়তাল্লিশ মিনিট হতে ঘন্টার মতো হয়ে থাকে। এই সময়টিকে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় তবে দুপুরের খাবারের পর আসবে না আলস্য।

চীনারা বিশ্বাস করে দুপুরে হালকা মিউজিকের সাথে একটা কুইক ন্যাপ বা ১৫/২০ মিনিটের ঘুম দিলে কার্যক্ষমতা বাড়ে। আপনার যদি সেটা মনে হয় বা আপনার জণ্য উপযুক্ত মনে হয়, তবে সেটা করতে পারেন।

হালকা ব্যায়াম:

খাবার ও বিশ্রাম শেষে  বাকি ১০ মিনিট সময় যদি খানিকটা হালকা পাতলা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করে নিতে পারেন। তাতে শরীরের মাঝে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

পানি পান:

কিছুক্ষণ পরপর পানিরবোতলে চুমুক দেওয়া পানি পানের সর্বোত্তম উপায়। খাওয়ার আগে পরে অতিরিক্ত পানি পান করলেপেট ফোলাভাব দেখা দিতে পারে, হতে পরে বুক জ্বালাপোড়াও। একবেলার খাবারের সঙ্গে ২৫০ মি.লি.লিটার পানি যথেষ্ট। খাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে আধা লিটার পানি পান করুন। এতে ক্ষুধা কমে যাবে, ফলে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।

 

আরও পড়ুন:

Exit mobile version