আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় নারিকেলের (ডাব, ঝুনা, শাঁস, পানি) খাদ্য মূল্য
Table of Contents
নারিকেলের (ডাব, ঝুনা, শাঁস, পানি) খাদ্য মূল্য
ভূমিকা :
নারিকেল বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। ব্যবহার বৈচিত্র্যে এটি একটি অতুলনীয় উদ্ভিদ। তাছাড়া নারিকেল একটি সুস্বাদু ও শোভাবর্ধনকারী গাছ। বাড়ির সামনে নারিকেল পাছের সারি লাগানো থাকলে আসলেই খুব সুন্দর দেখায়। নারিকেল গাছের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মানুষের কাজে লাগে। জানা গেছে, এ গাছটির তিন শতাধিক রকমের ব্যবহার রয়েছে। খাদ্য পানীর থেকে শুরু করে গৃহ নির্মাণের সরঞ্জাম, পশুখাদ্য, বাসন-কোসন ইত্যাদি জীবন যাত্রার যাবতীয় উপকরণ নারিকেল গাছ থেকে পাওয়া যায় ।
নারিকেলের ব্যবহার :
নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে দড়ি, মাদুর প্রভৃতি তৈরী করা হয়। নারিকেলের মালা দিয়ে অ্যাকটিভেটেড কাঠ কয়লা, বাটি, বাক্স, গল্পনা, বোতাম ও ঘর সাজাবার দ্রব্যাদি তৈরি হয়। পাতা মাদুর তৈরি ও ঘর আচ্ছাদনের কাজে ব্যবহার হয়। পাখা, ঝুড়ি, ঝাঁটা প্রভৃতিও নারিকেল পাতা থেকে তৈরী হয়। নারিকেলের পুষ্পমঞ্জরী কচি অবস্থায় বিশেষ প্রক্রিয়ার কাটলে তা থেকে মিষ্টি রস বের হয়। রস থেকে গুড় ও তাড়ি তৈরি করা যায়। কচি ফল অর্থাৎ ডাবের পানি অতি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর পানীয়।
চিত্র নারিকেলের ফাঁদি
নারিকেল কোরা ও নারিকেলের দুধ দিয়ে বিভিন্ন ব্যঞ্জন ও মিষ্টান্ন তৈরি করা যায়। এছাড়া রঞ্জক ও ঔষধ তৈরির কাজে নারিকেল ব্যবহার হয়। এর তেল ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যেমন- শ্রীলংকা। প্রদীপ জ্বালাতে এবং গ্লিসারিন ও কেশতেল তৈরিতে ও এটি ব্যবহার হয়। নারিকেল গাছের বহুবিধ ব্যবহারের কারণে প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে একে স্বর্গীয় গাছ বা কল্পতরু বলা হয়।
নারিকেল বীজের গঠন
নারিকেল ফল বা বীজের চারটি অংশ থাকে যথা- (ক) ফলত্বক, (খ) বীভত্বক, (গ) এন্ডোম্পার্য বা কার্নেল, (ঘ) ভ্রূণ
ফলত্বক :
নারিকেলের ফলত্বক আবার তিনটি অংশে বিভক্ত যেমন- ত্বক এটি নারিকেলের একেবারে বাহিরের গায়ের পাতলা বাদামি স্তর। ছোবড়া-ত্বকের নিচের স্তর হচ্ছে ছোবড়া। ছোবড়ার পরের স্তর হচ্ছে নারিকেলের মালা বা খোল। ত্বক, ছোবড়া ও খোল এই তিন স্তর মিলে ফলত্বক গঠিত।
বীজত্বক :
এটি একটি পাতলা বাদামি আবরণ। শাঁস ও খোলের মাঝে থাকে এবং শাঁসকে খোলের সাথে আটকে রাখে।
এন্ডোম্পার্ম বা কার্নেল :
নারিকেলের ভিতরের পুরু শাঁস ও পানিকে একত্রে সস্য বা এন্ডোস্পার্ম বলে। ডাবের শস্য বা এন্ডোম্পার্ম অসংখ্য কোষ দিয়ে গঠিত। কিন্তু এই কোষগুলোর মাঝে কোন কোষপ্রাচীর থাকে না। তাই অসংখ্য নিউক্লিয়াস ও সাইট্রোপ্লাজমের তরল দিয়ে ডাবের সস্য বা পানি তৈরি হয়।
চিত্র : নারিকেল বীজের বিভিন্ন অংশ।
ভ্রূণ :
এটি অতি ক্ষুদ্র। খোলের বোঁটার দিকে তিনটি চোখের মতো দাগ দেখা যায় এর যেকোনো একটি চোখের নিচে ভ্রূণ অবস্থান করে। অঙ্কুরোদগমের সময় ভ্রূণ বৃদ্ধি পেয়ে শাঁসের ভিতরের গহ্বর পূর্ণ করে ফোপরা তৈরি করে ।
নারিকেলের (ডাব, ঝুনা, শাঁস, পানি) খাদ্য মূল্য
ঝুণা নারিকেল, ডাব নারিকেলের পানি, কোপ্রা ও খইলের পুষ্টিমান (প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার অংশে) নিম্নের সারণিতে তালিকা দেখানো হলো-
উৎস : নারিকেলের উৎপাদন ও ব্যবহার কৃষিবিদ গিয়াসউদ্দিন আহমেদ।
আরও দেখুন :