Site icon Food & Culinary Arts Gurukul [ খাদ্য ও রন্ধনশিল্প গুরুকুল ] GOLN

এনজাইমের শ্রেণিবিভাগ এবং উৎস

এনজাইমের শ্রেণিবিভাগ এবং উৎস

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় এনজাইমের শ্রেণিবিভাগ এবং উৎস , যা উৎসেচক অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

এনজাইমের শ্রেণিবিভাগ এবং উৎস

গঠন প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে এনজাইমসমূহকে শ্রেণিবিভাগ করা যায়। আবার কী ধরনের বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার উপর। ভিত্তি করেও শ্রেণিবিন্যস্ত করা যায়।

(ক) গঠন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ গঠন বৈশিষ্ট্য ভিত্তিক এনজাইম দুই প্রকার, যথা— (i) সরল এনজাইম (Simple enzyme) যে এনজাইমের সম্পূর্ণ অংশই প্রোটিন দিয়ে গঠিত তাকে সরল এনজাইম বলে।।

যেমন- সুক্রো । (ii) যৌগিক এনজাইম (Complex enzyme) যে এনজাইমের প্রোটিন অংশের সাথে একটি অপ্রোটিন অংশ যুক্ত থাকে তাে যৌগিক এনজাইম বলে। যেমন- FAD.

(খ) কী ধরনের বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে কী ধরনের বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার উপর ভিত্তি করে এনজাইমসমূহে নিম্নলিখিতভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।

(1) অক্সিডোরিডামেজ এনজাইম (Oxido-reluctase Enzyme) ঃ এ জাতীয় এনজাইম কোনো পদার্থের সাথে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন বা ইলেক্ট্রন সংযুক্ত করে অথবা কোনো পদার্থ থেকে এগুলো বিমুক্ত করে। অক্সিজেন সংযোগ বা হাইড্রোজেন প্রতিস্থাপন বা ইলেকট্রন অপসারণকে বলা হয় অক্সিডেশন (Oxidation) বা জারণ।

আবার, হাইড্রোজেন সংযোজন বা অক্সিজেন বিয়োজন বা ইলেঝটুন যোগ হলে বিজারণ (reduction)। বাংলায় এদেরকে জারণ-বিজারণ এনজাইম বলা হয়। যেমন- সাইটোক্রোম অক্সিডেজ ফসফোগ্লিসারাল্ডিহাইড ডিহাইড্রোজিনেজ।

 

এখানে, NAD বিজারিত হয়ে NADH এবং 3-ফসফোগ্লিসারান্ডিহাইড হাইড্রোজেন হারিয়ে জারিত হয়েছে। (ii) ট্রান্সফারেজ এনজাইম (Transferase enzyme) : এ জাতীয় এনজাইম কোনো একটি পদার্থ হতে একটি গ্রুপকে (যেমন- NH) অপসারিত করে অন্য একটি পদার্থের সাথে সংযুক্ত করতে সহায়তা করে।

 

যেমন- গ্লুটামিক অ্যাসিড + অক্সালো অ্যাসিটিক অ্যাসিড /ট্রান্সফারেজ> a-কিটোপ্লুটারিক অ্যাসিড + অ্যাসপারটিক অ্যাসিড এক্ষেত্রে গ্লুটামিক অ্যাসিড হতে NH গ্রুপ অপসারিত হয়ে অক্সালো অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সাথে যুক্ত হয়ে অ্যাসপারটিক অ্যাসিডে পরিণত হয়েছে এবং নিজে a-কিটোপ্লুটারিক অ্যাসিডে পরিণত হয়েছে।

(iii) হাইড্রোলেজ এনজাইম (Hydrolase enzyme)

এ জাতীয় এনজাইম কোনো পদার্থের বিশেষ বন্ডের সাথে পানির অণু সংযুক্ত করে তাকে হাইড্রোলাইসিস করতে সহায়তা করে। সুক্রেজ, প্রোটিয়েজ, এস্টারেজ ইত্যাদি এ জাতীয় এনজাইম।

যেমন- A – X + H2O X-OH + HA

সুক্রোজ + পানি/ সুক্রেজ > গ্লুকোজ + ফ্রুক্টোজ

(iv) লাইয়েজ এনজাইম ( Lyaze enzyme) : এ শ্রেণির এনজাইম হাইড্রোলাইসিস ও জারণ-বিজারণ ছাড়াই অন্য উপায়ে সাবস্ট্রেটের মূলককে ট্রান্সফার করে থাকে। এরা কার্বন-কার্বন, কার্বন-অক্সিজেন, কার্বন-নাইট্রোজেন প্রভৃতি যোজকের উপর কাজ করে। উদাহরণ- অ্যালডোলেজ, আইসোসাইট্রেট লাইয়েজ ।

L-স্যালেট /L- স্যালেট/হাইড্রোলাইয়েজ> ফিউমারেট + পানি।

 

 

(v) আইসোমারেজ এনজাইম (Isomerase enzyme) ও এ জাতীয় এনজাইম অ্যালডোজ (Aldose) এবং কিটোজ (Ketose) সুগার এর আইসোমারিক পরিবর্তন সাধন করে ।

ফসফোগুকো

গ্লুকোজ-6-ফসফেট ফসফোগ্লুকো/আইসোমারেজ → ফ্রুক্টোজ 6 ফসফেট ।

 

(vi) লাইগেজ এনজাইম (Lygase enzyme) : এ জাতীয় এনজাইম ATP এর সহায়তায় দুই বা ততোধিক সাবস্ট্রেটিকে সংযুক্ত করে নতুন যৌগ সৃষ্টি করে। যেমন-

গ্লুটামিক অ্যাসিড + NH3 + ATP গ্লুটামিক /সিনথেটেজ • গ্লুটামিন + ADP + Pi.

(vii) কার্বোক্সিলেজ এনজাইম (Corboxylase enzyme) : এ জাতীয় এনজাইম কোনো পদার্থের সাথে CO2 অণু যুক্ত বা বিযুক্ত করতে সহায়তা করে।

 

অক্সালোসাকসিনিক অ্যাসিড<কার্বোক্লিলিজে> a-কিটোগ্লুটারিক অ্যাসিড + CO2 

 

(viii) এপিমারেজ এনজাইম (Apimerase enzyme) : এ জাতীয় এনজাইমসমূহ কোনো পদার্থকে এর এপিয়ারে পরিণত। করতে সহায়তা করে।

(ix) ফসফোরাইলেজ এনজাইম (Phosphorylase enzyme) 1 এ জাতীয় এনজাইম কোনো পদার্থের সাথে ফসফেট সংযুক্ত করতে বা বিযুক্ত করতে সহায়তা করে।

ফসফোরাইলেজ

→ গ্লুকোজ 6 ফসফেট + ADP

গ্লুকোজ + ATP-

(খ) এনজাইমের উৎস (Source of Enzyme) 1 এনজাইম এক ধরনের জৈব-রাসায়নিক অনুঘটক বা উৎসেচক পার্থ। এনজাইম বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক উভয় প্রকার অনুজীবের প্রজাতিরা আবাদ মাধ্যমে (Culture medium) এনজাইম তৈরি করে।

কোনো কোনো অনুজীবের এনজাইম আবাদ মাধ্যমে নিঃসৃত হয় তাদেরকে বহিঃকোষীয় এনজাইম বলে। আবার কোনো কোনো অনুজীবের এনজাইম কোষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তাদেরকে অন্তঃকোষীয় এনজাইম বলে। বহিঃকোষীয় এনজাইম অনুজীবের অনুপস্থিতিতেও কাজ করতে পারে। ঔষুধ, খাদ্য ও অন্যান্য শি প্রচুর এনজাইম দরকার হয়।

এনজাইম তৈরির জন্য তাই এনজাইম শিল্প গড়ে উঠেছে। Aspergillus, Penicillium, Mucor Rhines থেকে বিভিন্ন প্রকার এনজাইম নিঃসৃত করে বিভিন্ন কাজে লাগানো হচ্ছে। অণুজীব থেকে এমাইলেজ, ইনভারটেজ, প্রোটিয়েজ, ক্যাবলের, সেলুলেজ, ল্যাকটেজ, লাইপেজ প্রভৃতি এনজাইম অধিক পরিমাণে উৎপাদন করে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।

অনেক বেশি চাহিদার কারণে ক্রমান্বয়ে এনজাইম শিল্প গড়ে উঠেছে। চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় “fungal tukadiastase” নামক একটি এনজাইম ১৮৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি শিল্পকারখানার মাধ্যমে উৎপাদন শুরু করেন।

এরপর থেকে বিভিন্ন ধরনের কারখানা বিভিন্ন ধরনের এনজাইম উৎপাদন শুরু করে, যা বর্তমানে অণুজীব ব্যবহার করে উৎপাদন করা হচ্ছে। বেশি পরিমাণ এনজাইম তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন অণুজীব বিভিন্ন এই হলো-

আহরণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিম্নে কিছু এনজাইমের নাম ও তার উৎস (অণুজীব) এর নাম দেয়া (i) আলফা অ্যামাইলেজ (Alpha amylase) : Bacillus Subtilis ও B. Cereus নামক ব্যাকটেরিয়া এবং Aspergills

Mucor নামক ছত্রাক থেকে। (II) Alkaline Protease (অ্যালকালিন প্রোটিয়েজ) B. Licheniformis, B. firmus, Strepiomyces fralia

ব্যাকটেরিয়া ও Aspergillus niger, A. flava নামক ছত্রাক থেকে।

(iii) অ্যাসিড ফসফোটেজ (Acid Phosphatase) : Aspergillus, Endothia Parasitica নামক ছত্রাক থেকে (iv) লাইপেজ (Lipase) ঃ Penicillium chrysogenum’s Mucor Spp. নামক ছত্রাক থেকে। এটি ছাড়াও অন্যান্য উৎস নি

প্রাণিজ এনজাইম

ক্যাটালেজ (Catalase) – লিভার (Liver)

লাইপেজ (Lipase) -অগ্নাশয় (Pancreas)

ট্রিপসন (Trypsin)-অগ্নাশয় (pancreas)

 উদ্ভিজ্জ এনজাইম :

আলফা অ্যামাইলেজ (Allpho amylase) -মন্টেড বার্লি (malted barly)

পাপেন (Papain)-পেঁপে

লাইপোঅক্সিজেনেজ-সয়াবিন

বিটা-গ্লুকোনেজ-মন্টেড বার্লি

আরও পড়ূনঃ

 

Exit mobile version