আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় সুজি ও নেশেস্তার হালুয়া তৈরি অনুশীলন। সুজি বা সেমোলিনা এর ইংরেজি নাম Semolina। সুজি একরকম প্রক্রিয়াজাত খাদ্য। সুজি গম থেকে তৈরি হয়। সাধারণ রান্নার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন তৈরিতে সুজি ব্যবহার করা হয়। সুজি গম ছাড়াও, চাল ও ভুট্টা থেকেও তৈরি হতে পারে।
সুজি ও নেশেস্তার হালুয়া তৈরি অনুশীলন
প্রসঙ্গিক তথ্য :
গমের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল প্রচলিত উপাদন হচ্ছে সুজি। ছোট বাচ্চা, কিশোর-কিশোরীদের বাড়ন্ত শরীরের জন্য সুজির বিভিন্ন মিষ্টান্ন খাবার খুবই পুষ্টিকর। সুজিরই একটি উপাদান হচ্ছে নেশেস্তা। অবশ্য গম ও আটা হতেও নেশেস্তা আহরণ করা যায়। সুজি ৬-৭ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পাতলা কাপড়ে ছেঁকে নিলে যে সাদা মাড়ের মতো দ্রবণ পাওয়া যায় তাহাই নেশেস্তা।
গম হতে নেশেস্তা নিতে হলে গম পানিতে ভিজিয়ে প্রত্যেক দিনে পানি বদলাতে হবে। পঞ্চম দিনে গম বেটে দুধ নিতে হবে। গম, আটা বা সুজি হতে যে বিশুদ্ধ শ্বেতসার পাওয়া যায় তাই নেশেস্তা এবং অবশিষ্ট পদার্থ গ্লুটেন বা আমিষ। সুজির হালুয়া ও নেশেস্তার হালুয়া খুবই উপাদেয় এবং পুষ্টিকর। নেশেস্তার হালুয়া দেখতে স্বচ্ছ জেলির ন্যায়। বড় বড় মিষ্টির দোকানে নেশেস্তার হালুয়া বিক্রি হয়। বিশেষ করে নেশেস্তার হালুয়া পরিবেশন করে একটু বৈচিত্র্য আনা যায়।
সুজির হালুয়া তৈরি :
উপকরণ :
সুজির হালুয়া তৈরিতে নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে :
১. একটি কড়াইতে আধা কাপ ঘি ও ১ কাপ সুজি ভালো করে ভাজতে হবে।
২. অন্য পাত্রে চিনি ২ কাপ ও দুধ ১ কাপ ঘন করে জ্বাল দিতে হবে।
৩. দুধ ও চিনির মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে সুজির কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
৪. ঘন হয়ে আসলে কিসমিস, এলাচ গুঁড়া ও বাদাম দিয়ে নাড়তে হবে।
৫. হালুয়া হয়ে গেলে ঘিয়ে মাখা একটি ডিশে তুলতে হবে। চামচে ঘি মেখে হালুয়ার উপরে সমান করে সাজানো যায়।
৬. ঠাণ্ডা হওয়ার পূর্বেই বরফি করে কেটে দিতে হবে। একে সুজির মোহনভোগও বলে। ঘি-এর পরিবর্তে সয়াবিন তেল দিয়েও রান্না করা যায় ।
নেশেস্তার হালুয়া তৈরি :
উপকরণ :
১. চিনি – ২৫০ গ্রাম
২. সুজি – ১৫০ গ্রাম
৩. ঘি – ১০০ গ্রাম
৪. ফুড কালার সামান্য –
৫. কিশমিশ – পরিমাণমতো ৬. বাদাম – পরিমাণমতো
৭. গোলাপজল – পরিমাণমতো নেশেস্তার হালুয়া তৈরিতে নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।
সুজির হালুয়া তৈরিতে নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে :
১. একটি পাত্রে সুজি এক রাত ডুবো পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২. পরদিন সুজির উপরের পানি ফেলে নতুন পানি নিতে হবে। হাত দিয়ে সুজি কচলে সাদা মাড় বের করতে হবে। পাতলা কাপড় দিয়ে মাড় ছেঁকে নিতে হবে।
৩. সুজির অবশিষ্টাংশ মাড় গ্লুটেন হাতে যতদূর সম্ভব কচলে বের করে নিতে হবে।
৪. সমস্ত সুজির মাড় বা নেশেস্তা একটি বড় পাত্রে নিতে হাবে। এর সাথে ঘি, চিনি, সামান্য ফুড কালার দিয়ে চুলায় দিতে হবে। একটু পর দারুচিনি, এলাচ ও গোলাপজল দিতে হবে।
৫. মিনিট দশেকের মধ্যে নেশেস্তা ঘন হয়ে স্বচ্ছ হালুয়ায় পরিণত হবে। নামানোর পূর্বে কিশমিশ দিতে হবে।
৬. ঘি মাখানো ডিশে হালুয়া তুলে চামচ দিয়ে সমান করতে হবে।
৭. পেস্তা বাদাম কুচি দিয়ে সাজিয়ে বরফি কাটতে হবে।
৮. এরপর পরিবেশন করতে হবে।
৯. হালুয়া রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করলে ৩-৪ দিন রাখা যায়।
আরও দেখুন :