রান্নার প্রস্তুতি | রান্না খাদ্য পুষ্টি | অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর

রান্নার প্রস্তুতি : যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, কাজের ধারা এবং খাওয়ার রুচিরও পরিবর্তন হয়ে আসছে। সৃজনশীল মানুষ রান্নাকে বই পুস্তকের আওতায় এনে রন্ধনজ্ঞানের সীমা বিস্তৃত করেছে। এসঙ্গে প্রচলন হয়েছে রেসিপির। রেসিপি এমন একটি রন্ধন সম্বন্ধনীয় তালিকা যা পড়ে অনায়াসে খাবার প্রস্তুত করা যায়। পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে পানীয়, সুপ, সালাদ, মিষ্টান্ন, মাছ, মাংস ও সবজি দিয়ে তৈরি বিভিন্নরকম খাবার প্রস্তুতের রেসিপি দেয়া হয়েছে।

রান্নার প্রস্তুতি [ রান্না খাদ্য পুষ্টি ] অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর
অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর

রান্নার প্রস্তুতি

রেসিপি:

রান্নার রেসিপিতে উপকরণের মাপ এবং কিভাবে রান্না করতে হবে তা লেখা থাকে। রেসিপি দেখে রেসিপির মাপে রান্না করলে জিনিসের অপচয় হয় না। কতজন খেতে পারবে সেই পরিবেশন সংখ্যাও রেসিপিতে উল্লেখ থাকে। তাছাড়া রেসিপি দেখে নূতন খাবার রান্না করা যায়। খাবার কিভাবে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে সে নির্দেশও রেসিপিতে দেয়া হয়।

রান্না করার জন্য নিম্নরূপ প্রস্তুতির প্রয়োজন :

(১) রেসিপি পড়ে ঠিকভাবে বুঝে নিতে হবে।

(২) রেসিপিতে যে সব উপকরণ দেয়া হয় তা ব্যবহার করতে হবে।

(৩) উপকরণ সাবধানে এবং সঠিকভাবে মাপতে হবে।

(৪) রেসিপিতে রান্নার যে কৌশলের উল্লেখ থাকে সে কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

(৫) খাদ্য প্রস্তুতে উপযুক্ত পাত্র ব্যবহার করা, সঠিক তাপে রান্না করা, পানি মাপ মতো দেয়া এবং হাঁড়ির মুখ খোলা রেখে বা বন্ধ করে রান্না করার বিষয়সমূহ মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করতে হবে।

(৬) রান্না শেষে সময় মতো চুলা থেকে নামাতে হবে।

(৭) রেসিপির নির্দেশ মতো খাবার ঠাণ্ডা বা গরম এবং বিভিন্ন সস ও চাটনি ইত্যাদি সহযোগে নানা উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

 

রেসিপি বুঝার নির্দেশ:

রেসিপি বুঝতে হলে খাদ্যের মাপ ও ওজন, রান্নার সরঞ্জাম, রান্নার কৌশল, বিভিন্ন পদ্ধতিতে রান্না, রান্নার উপকরণ ও মসলা এবং বিনিময় বা বিকল্প খাদ্য ইত্যাদি কয়েকটি বিষয় সম্বন্ধে আগেই পড়ে জেনে নিতে হবে।

যেমন :

(১) মাংস, টুকরা ——————- ১ কেজি

(২) চিংড়িমাছ, খোসা ছাড়ান —— ১/২ কাপ

(৩) পেঁয়াজ, কুচি —————— ১ টে. চামচ

(8) আলু, স্লাইস ——————– ৪ টি

(৫) আম, ফালি ——————– ২ টি

(৬) মরিচ, বাটা ——————– ১ চা চামচ

(৭) দারচিনি, ২ সে.মি. লম্বা ——– ২ টুকরা

(8) পাউরুটি, ২ সে. মি. পুরু ——- ৩ স্লাইস

১ নং- এক কিলোগ্রাম মাংস টুকরা করে নেয়া বুঝায়।

২ নং- চিংড়িমাছ খোসা ছাড়িয়ে আধা কাপ মেপে নেয়া বুঝায়।

৩ নং -পেঁয়াজ কুচি করে ১ টেবিল চামচ নিতে হবে।

৪ নং –চারটি আলু খোসা ছাড়িয়ে স্লাইস করে কাটতে হবে।

৫ নং –দুটো আম খোসা ছাড়িয়ে লম্বা টুকরা করতে হবে।

৬ নং বাটা মরিচ ১চা চামচ নেয়া বুঝায়।

৭ নং –২ সে. মি. লম্বা ২ টুকরা দারচিনি এবং

৮ নং–২ সে. মি. পুরু ৩ স্লাইস পাউরুটি বুঝায়।

রেসিপি বুঝতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য রান্নার জ্ঞাতব্য বিষয়গুলো সহজভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে মাপ ও ওজনের সাংকেতিক চিহ্ন (যেমন টে. চা., কেজি), রান্নার কৌশল, রান্নার পদ্ধতি, রান্নার তৈজসপত্র, তাপ, মসলা ইতাদি বিষয়গুলো পড়ে বুঝে নিতে হবে। রেসিপি বুঝে ঠিক মাপে এবং ঠিক পদ্ধতিতে রান্না করা একান্ত দরকার। তবে লবণ, চিনি এবং ঝাল ও মসলা ব্যবহারে নিজের পছন্দমত মাপে কম বা বেশি করা যেতে পারে।

চুলার তাপ বেশি বা কম হলে পানির পরিমাণে তফাৎ হয়। এ অবস্থায় নিজের বিবেচনায় পানির পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে। রেসিপিতে যে পরিমাণ দেয়া আছে তার চেয়ে দ্বিগুণ/তিনগুণ খাবার তৈরি করতে হলে উপকরণের পরিমাণগুলো ২,৩, …….দিয়ে গুণ করে নিতে হবে। আবার কম করতে চাইলে ২,৩ ………… দিয়ে ভাগ করতে হবে।

রান্নার সরঞ্জাম ও তৈজসপত্র:

মাপার সরঞ্জাম:

চা চামচ, টেবিল চামচ, এক কাপ, আধা কাপ ইত্যাদি সরঞ্জাম মাপার কাজে ব্যবহার করা হয়। মাপার জন্য যে কাপ ব্যবহৃত হয় তা বড় চায়ের কাপ এর সমান। মাপার সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে : তরল জিনিস মাপার কাপ, শুকনা জিনিস মাপার কাপ, মাপার চামচ, সমান করার ছুরি।

 

বাম থেকে [ বড় থেকে ছোট ] - পরিবেশন চামচ, টেবিল চামচ (টেবিল চামচ), ডেজার্ট চামচ, চা চামচ (চা চামচ) । L-R - Serving spoon, tablespoon (Tbsp.), Dessert spoon, Teaspoon (tsp.)
বাম থেকে [ বড় থেকে ছোট ] – পরিবেশন চামচ, টেবিল চামচ (টেবিল চামচ), ডেজার্ট চামচ, চা চামচ (চা চামচ) । L-R – Serving spoon, tablespoon (Tbsp.), Dessert spoon, Teaspoon (tsp.)

পরিমাপের চামচ [ Measuring Spoons ]
পরিমাপের চামচ [ Measuring Spoons ]

পরিমাপের ৪ রকমের চামচ [ 4 Measuring Spoons ]
পরিমাপের ৪ রকমের চামচ [ 4 Measuring Spoons ]

কাটার সরঞ্জাম:

ছুরি, বঁটি, দা, কুরুনি, শিলনোড়া বিস্কুট কাটার নক্সা, ডোনাট কাটার, কিমার মেশিন ইত্যাদি সরঞ্জাম দিয়ে খাদ্য নানা ভাবে কাটা হয়, কুরানো হয় এবং বাটা হয়।

সবজি কুরুনি

সবজি কুরুনি (grater) : নারিকেল কুরুনি ছাড়াও বাজারে সবজি কুরুনি বিক্রি হয়। সবজি কুরুনি টিনের তৈরি, এতে অনেক ছিদ্র থাকে। ছিদ্রগুলি ধারাল থাকে বলে সবজি কুরিয়ে নেয়া যায়। ছোট ছিদ্রের কুরুনিতে মিহি কুরানো হয় এবং বড় ছিদ্রের কুরুনিতে মোটা করে বা ঝুরি করে কুরানো যায়। লাউ দুধ রান্নার জন্য লাউ কুরিয়ে নেয়া হয়, আবার মামালেডের জন্য গাজর, আম ঝুরি করে কুরিয়ে নিতে হয়।

বিভিন্ন ধরণের কুরুনি:

বিভিন্ন কাজের জন্য একটি কুরুনি [ A box grater with multiple grating surfaces ]
বিভিন্ন কাজের জন্য একটি কুরুনি [ A box grater with multiple grating surfaces ]

নারকেল কুরুনি [ Grater, Shredder - Traditional coconut grater design in the Indo-Pacific ]
নারকেল কুরুনি [ Grater, Shredder – Traditional coconut grater design in the Indo-Pacific ]

Box grater with vegetable slicing surface displayed
Box grater with vegetable slicing surface-displayed

 

বিস্কুট কাটার নক্সা :

বিস্কুটের খামির বেলে কাটার জন্য টিনের তৈরি নানা আকারের নক্সা পাওয়া যায়। এই নক্সাগুলি গোল, চারকোণা, তিনকোণা, বরফি, তারা, ফুল, মাছ ইত্যাদি আকারের হয়। এই নক্সাগুলির চারধার সমান বা ঢেউ খেলানো থাকে। যে দোকানে টিন কাটা হয় সেখানে নক্সা দেখিয়ে বিস্কুট কাটার নক্সা তৈরি করে নেয়া যায়। কয়েকটি বিস্কুট কাটারের নকসা নিচের ছবিতে:

Cookie Cutter বিস্কুট কাটার নক্সা বিস্কুটের নক্সা কুকিজের নক্সা 27 রান্নার প্রস্তুতি | রান্না খাদ্য পুষ্টি | অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর
বিস্কুট কাটার নক্সা, বিস্কুটের নক্সা, কুকিজের নক্সা [ Cookie Cutter ]

Cookie Cutter বিস্কুট কাটার নক্সা বিস্কুটের নক্সা কুকিজের নক্সা 25 রান্নার প্রস্তুতি | রান্না খাদ্য পুষ্টি | অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর
বিস্কুট কাটার নক্সা, বিস্কুটের নক্সা, কুকিজের নক্সা [ Cookie Cutter ]

Cookie Cutter বিস্কুট কাটার নক্সা বিস্কুটের নক্সা কুকিজের নক্সা 21 রান্নার প্রস্তুতি | রান্না খাদ্য পুষ্টি | অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর
বিস্কুট কাটার নক্সা, বিস্কুটের নক্সা, কুকিজের নক্সা [ Cookie Cutter ]

ডোনাট কাটার :

এটি ৭.৬ সে. মি. ব্যাসের একটি বিশেষ রকম গোলাকার নমা। এর মাঝখানে ছোট আর একটি গোলাকার টিন আটকানো থাকে, তাই ডোনাটের মাঝের অংশ কেটে বাদ যায়। ফলে ডোনাট ভাজার পর মাঝে ছিদ্র হয়। পরবর্তী অধ্যায়ে ডোনাটের রেসিপি দেয়া হয়েছে।

 

ডোনাট কাটার [ Donut Cutter ]
ডোনাট কাটার [ Donut Cutter ]

ডোনাট কাটার [ Donut Cutter ]
ডোনাট কাটার [ Donut Cutter ]

মিশাবার সরঞ্জাম রান্না করার সময় নানারকম খাবার একসাথে মিশাবার জন্য চামচ, ঘুটনি, বিটার, চালনী, গামলা, খঞ্চা ইত্যাদি সরঞ্জামের ব্যবহার হয়।

এগ বিটার/হুইস্ক (whisk) :

ডিম ফেটাবার জন্য এগ বিটার এবং হুইস্ক ব্যবহার করা হয়। মেরাং মেয়নেজ হুইস্ক দিয়ে করা যায়।

এগ বিটার [ Egg Better]
এগ বিটার [ Egg Better]

হুইস্ক [ Whisk ]
হুইস্ক [ Whisk ]

ফুলঝুরি ঃ বিস্কুট কাটার নক্সার মত টিনের তৈরি নক্সা। এই নক্সা ৩০ সে. মি. লম্বা মোটা তারে আটকানো থাকে। ব্যবহারের সময় প্রথমে ফুলঝুরি নক্সা গরম তেলে ডুবিয়ে রাখতে হবে। তেল থেকে তুলে গোলানো ময়দায় নক্সার অংশ ডুবিয়ে সাবধানে তুলে নিয়ে আবার চুলার উপর গরম তেলে ডোবাতে হবে।

গরম তেলে পিঠা ফুলে উঠলে ফুলঝুরির মোটা তার ধরে আস্তে আস্তে ঝাঁকিয়ে পিঠা ছাড়িয়ে ফুলঝুরি তুলে নেবে। ফুলঝুরি নক্সা গোলান ময়দায় সম্পূর্ণ ডুবাতে হয় না। সম্পূর্ণ ডুবালে পিঠা ফুলঝুরিতে আটকে যাবে। অষ্টম অধ্যায়ে ফুলঝুরি পিঠার রেসিপি দেয়া হয়েছে।

ছাঁচ (মোলড) : এ্যালিউমিনিয়াম, টিন অথবা কাঁচের তৈরি নানা আকারের মোড়ে খাঁজ কাটা এবং নক্সা করা থাকে। ভাপের পুডিং তৈরির জন্য মোড ব্যবহার হয়। মোডে জেলাটিন, সবজি ও ফল দিয়ে তৈরি সালাদ জমানো যায়।

বেকিং এর সরঞ্জাম:

তন্দুর বা ওভেনে পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, প্যাটিস, ক্রিমরোল, পাই এসব খাবার বেক করার জন্য নানা আকারের পাত্রের দরকার। ঠিক মাপ ও সঠিক আকারের পাত্র না হলে কেক, পাউরুটি ভাল বেক হয় না। বেকিং এর পাত্র টিন অথবা এ্যালিউমিনিয়াম অথবা ওভেন প্রুফ কাঁচ দিয়ে তৈরি।

কেকের পাত্র (কেক প্যান) :

নানা রকম কেক বেক করার জন্য গোলাকার, আয়তাকার, বর্গাকার ইত্যাদি বিভিন্ন আকারের পাত্র ব্যবহৃত হয়। এছাড়া নক্সা করা পাত্রেও কেক বেক করা যায়। পাউরুটির পাত্র সাধারণত আয়তাকার হয়ে থাকে।

কেকের পাত্র [ Cake Pan ]
কেকের পাত্র [ Cake Pan ]

মাফিন প্যান :

ছয়টি বা বারটি পেয়ালা বসানো মাফিন প্যান টিন অথবা “এ্যালিউমিনিয়াম দিয়ে তৈরি করা যায়। মাফিন, কাপকেক, টার্টপেস্ট্রি ও ডিনার রোল বেক করার জন্য এটি বিশেষ ধরনের পাত্র।

মাফিন প্যান / কাপকেক প্যান [ Muffin Pan / Cupcake Pan ]
মাফিন প্যান / কাপকেক প্যান [ Muffin Pan / Cupcake Pan ]

মাফিন প্যান / কাপকেক প্যান [ Muffin Pan / Cupcake Pan ]
মাফিন প্যান / কাপকেক প্যান [ Muffin Pan / Cupcake Pan ]

বেকিং ট্রে ও শিট :

টিনের বা এ্যালিউমিনিয়ামের তৈরি বেকিং ট্রে ও শিট বর্গাকার বা আয়তাকার হয়। বেকিং ট্রের চারধার ২.৫ সে. মি. উঠানো থাকে। জ্যাম রোল বেকিং ট্রেতে বেক করা হয়। বিস্কুট, ক্রিমরোল, প্যাটিস এসব বেকিং শিটে বেক করা সুবিধাজনক।

বেকিং ট্রে, বেকিং শিট [ Baking Trays, Baking Pans ]
বেকিং ট্রে, বেকিং শিট [ Baking Trays, Baking Pans ]

বেকিং ট্রে, বেকিং শিট [ Baking Trays, Baking Pans ]
বেকিং ট্রে, বেকিং শিট [ Baking Trays, Baking Pans ]

পাইপ্যান :

এটি বিশেষ আকারের গোলাকার পাত্র, চারধার সামান্য উঁচু ও ঢালু। এতে পাই বেক করা হয়।

পাইপ্যান / পাই প্যান / পাই প্লেট [ Pie Pan, Pie Plate ]
পাইপ্যান / পাই প্যান / পাই প্লেট [ Pie Pan, Pie Plate ]

পাইপ্যান / পাই প্যান / পাই প্লেট [ Pie Pan, Pie Plate ]
পাইপ্যান / পাই প্যান / পাই প্লেট [ Pie Pan, Pie Plate ]

পেস্ট্রিব্রাশ :

বেকিং এর কাজে ব্যবহার করার জন্য এটি একধরনের মোটা তুলি। রং দেয়ার মোটা তুলিও পেস্টিব্রাশ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মুরগীর পালক বা পাট দিয়ে ব্রাশ তৈরি করা যায়। পেস্টিব্রাশের সাহায্যে বিস্কুট, পাউরুটি, প্যাটিস এর উপর ফেটানো ডিমের প্রলেপ দিয়ে ওভেনে দেয়া হয়।

পেস্টিব্রাশ [ Pastry Brush ]
পেস্টিব্রাশ [ Pastry Brush ]

পেস্টিব্রাশ [ Pastry Brush ]
পেস্টিব্রাশ [ Pastry Brush ]

পাইপিং ব্যাগ :

মোটা কাপড়ের তৈরি কোণাকৃতি ব্যাগ। পাইপিং ব্যাগের সংগে টিনের তৈরি বিভিন্ন রকম নক্সা থাকে। ব্যাগের কোণাকৃতি মুখে এই নক্সা আটকে কেক, বিস্কুট বা পুডিং সাজান হয়। আজকাল প্লাষ্টিক দিয়ে তৈরি কেক সাজাবার সরঞ্জাম পাওয়া যায়। ট্রেসিং পেপার দিয়ে পানের খিলির মত তৈরি করে, সূচাকৃতি মুখ (দশম অধ্যায়ে ছবি) কাঁচি দিয়ে কেটে নিয়ে পাইপিং ব্যাগের মত ব্যবহার হয়।

পাইপিং ব্যাগে লেমন ক্রিম, মাখন ক্রিম বা মেরাং ভরে ব্যাগে চাপ দিয়ে নক্সা করার কৌশল আয়ত্ব করে নিতে হবে। কাঁচা হাতে কেক সুন্দর করে সাজাতে না পারলেও কয়েকদিনের অভ্যাসে হাত পাকা হয়ে যায়।

পাইপিং ব্যাগ [ Piping Bag ]
পাইপিং ব্যাগ [ Piping Bag ]

Piping Bag পাইপিং ব্যাগ 4 রান্নার প্রস্তুতি | রান্না খাদ্য পুষ্টি | অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর

পাইরেক্স ডিস :

বিশেষভাবে তৈরি এই কাঁচের পাত্র তাপে নষ্ট হয় না। ওভেনে বেক করার জন্য এই পাত্র ব্যবহার করা হয়। এতে পুডিং, সুফলে, মেকারনি চিজ ইত্যাদি বেক করা যায়।

পাইরেক্স ডিস [ Pyrex dish ] গুরুকুল
পাইরেক্স ডিস [ Pyrex dish ]

পাইরেক্স ডিস [ Pyrex dish ] গুরুকুল
পাইরেক্স ডিস [ Pyrex dish ] গুরুকুল

ক্রিম রোলের রোলার ছাঁচ:

ক্রিম রোলের ছাঁচ ১৫ সে. মি. লম্বা ও ১ সে. মি. ব্যাসের গোলাকার কাঠে ক্রিম রোল পেঁচানো হয়। এই সরঞ্জাম কাঠের পরিবর্তে টিন দিয়েও তৈরি হয়। টিনের রোলারের একপ্রান্ত মোটা এবং অপর প্রান্ত অপেক্ষাকৃত কম মোটা হয়।

ক্রিম রোলের রোলার ছাঁচ [ Cream Roll Mould ]
ক্রিম রোলের রোলার ছাঁচ [ Cream Roll Mould ]

ক্রিম রোলের রোলার ছাঁচ [ Cream Roll Mould ]
ক্রিম রোলের রোলার ছাঁচ [ Cream Roll Mould ]

উনুনে রান্না করার সরঞ্জাম:

হাঁড়ি, সসপ্যান, কড়াই, ফ্রাইপ্যান, তাওয়া, প্রেসার কুকার ইত্যাদি বিভিন্ন আকারের পাত্রে বিভিন্ন রকম রান্না হয়। এ্যালিউমিনিয়ামের পাত্রেই রান্নার প্রচলন বেশি। লোহার কড়াই এবং তামার ডেগচিতে টক খাবার রান্না করা উচিত নয়। কালাই ছাড়া তামার ডেগচিতে রান্না খাবারে ক্ষতি করে।

প্রেসার কুকার : প্রেসার কুকার ষ্টেনলেস স্টীলের তৈরি বেশ মজবুত হাঁড়ি। ঢাকনার ভিতরের দিকে রবার বসান থাকায় হাঁড়ির মুখ এমন ভাবে বন্ধ হয় যে বাষ্প বের হতে পারে না, ফলে হাঁড়ির ভিতরের বাষ্পের চাপে তাপ বৃদ্ধি পায় ও রান্না তাড়াতাড়ি হয়। প্রেসার কুকারের ঢাকনায় প্রেসারের চাকতি বসাবার জন্য ছিদ্র থাকে।

ঢাকনার ছিদ্র দিয়ে বাষ্প বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রেসারের চাকতি বসাতে হয় এবং রেসিপির সময় অনুযায়ী চুলা থেকে নামাতে হয়। প্রেসার কুকার ঠাণ্ডা করার পর ঢাকনার মুখ খোলা উচিত। মাংস, ডাল, সবজি প্রেসার কুকারে খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। প্রেসার কুকারে ভাপের পুডিং তাড়াতাড়ি জমে।

রান্নার জ্ঞাতব্য বিষয়:

বাংলাদেশে খাদ্য দ্রব্য গ্রাম, কিলোগ্রাম, কুইন্টাল এবং মেট্রিকটন, লিটার ইত্যাদি বিভিন্ন ওজনে বেচাকেনা হয়। কিন্তু রান্নাঘরে খাদ্যদ্রব্য ওজন করে নিয়ে রান্না করা ঝামেলার কাজ। ওজন করার পরিবর্তে মেপে নিলে কাজ সহজ হয়। রান্নাঘরে মাপার জন্য কাপ ও চামচের ব্যবহার সুবিধাজনক । এক কাপ ওজনে ২০০ গ্রামের সমান, এক টেবিল চামচ ১২:৫ গ্রামের সমান এবং এক চা চামচ ৫ গ্রামের সমান।

 

আরও পড়ুন:

Competency Standards For Food Processing and Quality Control NTVQ, Level 1- 3

Leave a Comment